দামী আসবাব দিয়ে ঘর ভরে ফেললেই যে দেখতে সুন্দর লাগবে- এমন কোনো কথা নেই।বাসা সাজাতে ঘরের আকার থেকে শুরু করে বাজেট- নানান বিষয় মাথায় রাখতে হয়।প্রধান আসবাবপত্রের মানে গুরুত্ব না দেওয়া
প্রথম ভুলটা প্রায়ই হয় সেটা হল, যেন-তেন ধরনের আসবাব দিয়ে ঘর ভরা। এসবের মধ্যে রয়েছে সোফা, চেয়ার, বিছানা, ডাইনিং টেবিল ইত্যাদি।এই মন্তব্য করে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক অন্দরসজ্জাকর ক্যাথি কুয়ো বলেন, “আয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই ধরনের আসবাব মূল্য দিয়ে ও মান সম্মত কেনা উচিত। কারণ এগুলো অনেকদিন ব্যবহার করা হয়। আপনি নিশ্চই এক বছর পর পর ডাইনিং টেবিল বা খাট কিনবেন না।”
তিনি আরও বলেন, “তবে ঘরের সাথে মানানসই আসবাব কিনতে হবে। বিশাল সোফা কেনার চাইতে মেঝের সাথে মানানসই নিচু সোফা ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে।”
জানালার সজ্জা ঠিক না রাখা
বেশিরভাগ সময় যে ভুল হয়, সেটা হল ঘরের সজ্জায় জানালার দিকে নজর না দেওয়া।
একই প্রতিবেদনে অন্দরসজ্জার প্রতিষ্ঠান ‘রেগান বিলিংস্লে ইন্টেরিয়রস’য়ের প্রতিষ্ঠাতা রেগান বিলিংস্লে বলেন, “পর্দা খুব বড় বা খুব ছোট হলে দেখতে খারাপ লাগে। আবার ভুল উচ্চতায় ঘরের সামঞ্জস্যতা ঠিক থাকবে না।”
এমনভাবে ঝুলাতে হবে যাতে, পর্দার নিচের অংশ হালকা ছুঁয়ে থাকে মেঝে। তবে এজন্য পর্দার রড নিচে নামানো যাবে না। নামালে ঘর ছোট লাগবে। তাই জানালার ওপরের দিকে ফাঁকা অংশ যাতে পর্দা দিয়ে ভরাট হয়ে মেঝে পর্যন্ত যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে- পরামর্শ দেন এই অন্দরসজ্জাকর।
আর এজন্য দর্জিকে বাড়তি কাপড় যোগ করার কথা বলা যেতেই পারে।
ছোট গালিচা ব্যবহার করা
যে কোনো ভুল মাপের গালিচা ব্যবহার ঘরের চেহারা বাজে করে দেবে।
“বেমানান গালিচা ঘরের সামঞ্জস্য নষ্ট করে” বলেন বিলিংস্লে।
তার কথায়, “সঠিক মাপের গালিচা ব্যবহারের জন্য ঘরের আসবাবের মাপ অনুযায়ী সমান হতে হবে।”
ঘরের কোণায় বিছানা রাখা
ওয়াশিংটন ভিত্তিক অন্দরসজ্জার প্রতিষ্ঠান ‘গেটউড ডিজাইন্স’য়ের প্রতিষ্ঠাতা জেসিকা গেটউড বলেন, “ঘরের কোণের দিকে বিছানা রাখার হল সবচেয়ে বড় ভুল।”
“ছোট ঘর হলে ভিন্ন কথা। তবে সাধারণ মাপের ঘরের কোণের দিকে বিছানা রাখলে মনে হয় ভারসাম্য ঠিক লাগবে না।”- বলেন তিনি।
তাই বিছানা রাখতে হবে ঘরের মাঝ বরাবর। আর দুপাশে যাতে খালি জায়গা থাকে সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
সব কিছু এক জায়গা থেকে কেনা
সাজানো জিনিস ও আসবাব এক জায়গা থেকে কেনাটা সহজ আর ঝামেলাহীন মনে হতে পারে।
তবে গেটউড পরামর্শ দেন, “এটা ঘর সাজানোর সেরা উপায় নয়। সরাসরি দোকানটা যেন বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘরে- এমন অনুভূতি যেন না হয়। এজন্য আসবাবপত্রের মধ্যে ভিন্নতা থাকা আবশ্যক।”
ঐতিহ্যবাহী, পূর্ব পুরুষের ব্যবহার করা জিনিস বা কোনো শিল্পীর শিল্পকর্ম- সব কিছুর সমন্বয়ে ঘর সাজালে দেখতে ভালো লাগবে।
আসবাব দিয়ে দেয়াল ঢেকে ফেলা
বিলিংস্লে বলেন, “প্রায় সবারই সাধারণ একটা অভ্যাস হল সব দেয়াল আসবাব দিয়ে ঢেকে ফেলা। এর ফলে ঘর দেখতে আরামদায়ক লাগে না।”
ঘরে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করতে, দেয়াল থেকে কিছুটা দূরত্ব রেখে আসবাব রাখতে হবে। যেন নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা থাকে।
যদি সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়, তবে পুরো ঘর পর্যবেক্ষণ করে কোথায় কী রাখলে কেমন দেখাবে সেটা বোঝার জন্য চক দিয়ে মেঝেতে দাগ দিয়ে আন্দাজ করার যেতে পারে।
এতে কল্পনা করতে সুবিধা হবে কোথায় কোনভাবে আসবাব রাখলে দেখতে ভালো আর আরামদায়ক লাগবে।