১ হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কিছুটা দেরিতে সম্প্রতি বেশকয়েকটি ক্যানেল সিস্টেমের টেন্ডার হয়েছে। কয়েকটি স্থানে কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৪ সালের জুনে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৭০০ কিলোমিটার খাল সংস্কার, খালের ওপর ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রতিবছর একহাজার কোটি টাকার বাড়তি ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, তিস্তা ব্যারেজের প্রধান খাল ও সেচ খালের মাধ্যমে প্রতিবছর পানি স্বল্পতার কারণে রংপুর ও দিনাজপুরের কয়েকটি উপজেলাকে সেচ সুবিধা থেকে বাদ রেখে সেচ দেওয়া হতো। ১৯৯৩-৯৪ শস্যবছর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি উপজেলায় ব্যাপকভাবে আউশ ও আমন উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তিস্তার পানি দিয়ে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০০৬-০৭ শস্যবছর থেকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বোরো মৌসুমেও সেচ কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়।
প্রথমদিকে আমন মৌসুমে মোট সেচযোগ্য ৭৯ হাজার ৩৭৯ হেক্টর এলাকার প্রায় সম্পূর্ণটাই সেচের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বোরোর ক্ষেত্রে পানির দুষ্প্রাপ্যতায় সেচ-সাফল্যের চিত্র ছিল একেবারেই হতাশাজনক। ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আনার কথা থাকলেও তা কোনো দিনই সম্ভব হয়নি। তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে প্রধান খাল ও ৩৪ সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে খালগুলো সংস্কার না হওয়ায় সেচ কমান্ডে পানি সরবার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তার সেচ কমান্ড বাড়ানোর প্রস্তাবনা দিলে দীর্ঘদিন পরে প্রকল্পটি একনেকে পাশ হয়। এই প্রকল্পের আওতায় রয়েছে প্রধান ক্যানেল, দিনাজপুর ক্যানেল, বগুড়া ক্যানেল, রংপুর ক্যানেল, নীলফামারী ক্যানেল, সৈয়দপুর ক্যানেলসহ ভেশকয়েকটি ক্যানেল। এসব ক্যানেলের দৈর্ঘ ৭০০ কিলোমিটার। ক্যানেলের দুইপাড় সংস্কারসহ বিভিন্ন কাজ করা হবে। তবে নদী নিয়ে যারা আন্দোলন করছেন এমন একাধিক সংগঠনের নেতা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
পি এস/ এন আই