আলি আবরার
দীর্ঘ ২ যুগ পর আজ খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। নগরীর শিববাড়ি মোড় হতে যাচ্ছে এ সম্মেলনের স্থান। দীর্ঘদিন পর এ সম্মেলন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের যুবসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে সম্মেলনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিলবোর্ড, ফেস্টুন, লাইটিং, পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে আশাবাদী দলের নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ সংগঠনটির নেতারা প্রকাশ্যে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার খবরে নড়েচড়ে বসেছেন নেতৃত্ব প্রত্যাশিতরা।কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিমত, দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত নেতারাই আগামী দিনের নেতত্ব নির্বাচিত হবেন। বিতর্কিতরা সুযোগ পাবেন না।সংগঠনটির মহানগর নেতৃত্বেও বিষয়টি অনেকটাই নিশ্চিত।
তবে জেলা কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের তালিকা দীর্ঘ। যুবলীগের সাবেক নেতারা ছাড়াও এ পদ দুটিতে উঠে এসেছে ছাত্রলীগের একাধিক সাবেক নেতাদের নাম। আর পদ প্রত্যাশীদের প্রচার-প্রচারণায় নগরীর অধিকাংশ বিলবোর্ডগুলো ছেয়ে গেছে। এখন চলছে তোরণ নির্মাণের তোড়জোড়। আবার কেউ কেউ পদ পেতে ছুটছেন সংগঠনের নীতি নির্ধারণীদের দ্বারে দ্বারে। সবমিলিয়ে খুলনা জেলা যুবলীগে নতুন এক চমকের অপেক্ষা করছেন তৃনমূলের কর্মীরা।
মহানগর কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হলেও জেলায় দুটি পদ চেয়েছেন ১৭ জন। নগর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একক প্রার্থী যথাক্রমে বর্তমান আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ ও বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন। ফলে আসন্ন সম্মেলনে নগর নেতৃত্ব অনেকটা নিশ্চিত হলেও জেলায় চমকের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন কী জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার বাইরের কেউ জেলার নেতৃত্বে আসা অসম্ভব নয় বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ।জেলায় সভাপতি পদে ছয় জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১১ জন জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। সভাপতি পদ প্রত্যাশীরা হলেন বর্তমান যুবনেতা অজিত বিশ্বাস, যুবনেতা সরদার জাকির হোসেন, খুলনা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী রায়হান ফরিদ, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাদীউজ্জামান হাদী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরাফাত হোসেন পল্টু ও জসিম উদ্দিন বাবু। সাধারণ সম্পাদক প্রত্যাশী ১১জনের মধ্যে রয়েছেন- যুবনেতা এবিএম কামরুজ্জামান, মাহফুজুর রহমান সোহাগ, সাবেক ছাত্রনেতা দেব দুলাল বাড়ই বাপ্পী, তসলিম হুসাইন তাজ, মো. মুশফিকুর রহমান সাগর, মো. আবু সাঈদ খান, বর্তমান যুবনেতা জলিল তালুকদার, মো. কামরুজ্জামান মোল্লা, হারুন আর রশিদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ছাত্রলীগ জেলা সভাপতি মো. পারভেজ হাওলাদার।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, যুবলীগ দেশের অন্যতম শীর্ষ সংগঠন। এখানে যোগ্য নেতাদের তালিকাও দীর্ঘ। ফলে সেখান নেতৃত্ব বাছাই জটিল। শুধু প্রচার-প্রচারণা দেখে নেতৃত্ব বাছাই হবেনা। গোটা আমলনামা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের বিগত সম্মেলন ও কমিটির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।এক নেতা বলেন, জেলায় প্রত্যাশিত পদের আগ্রহী প্রার্থীতা ও প্রাপ্তিতে পরিবর্তন হতে পারে। কেউ সভাপতির চেয়ে আবেদন করে সাধারণ সম্পাদক হলেও অস্বাভাবিক হবে না।
এদিকে মঙ্গলবার সমাবেশের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। প্রধান অতিথি থাকবেন বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষপুত্র, বাগেরহাট ০১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, খুলনা সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা ০২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর প্রপসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল। প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাঈনুল হোসেন খান। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডঃ ড. শামীম আল সোহাগ নগর যুবলীগের আহবায়ক সফিকুর রহমান পলাশ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।সম্মেলনের সভাপতিত্ব করবেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান জামাল। সঞ্চালনায় থাকবেন নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শেখ শাহাজালাল হোসেন সুজন।