হিজাব বিতর্কে উত্তাল কলকাতা। হিজাব পরে ক্লাস নেওয়া যাবেনা কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন বিধিনিষেধের মুখে চাকরি ছাড়তে ‘বাধ্য’ হয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত কবরডাঙার এলজেডি আইন কলেজের অধ্যাপক সানজিদা কাদের নামের এক শিক্ষিকা।
সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন অধ্যাপক সানজিদা কাদের। এর পরই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি।
সানজিদার অভিযোগ, গত রমজানের পর থেকেই তিনি হিজাব পরে কলেজে আসছেন। এতদিন তাঁকে এই বিষয়ে কিছু জানায়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে গত ৩০ মে তিনি হিজাব পরে কলেজে আসার পর কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে হিজাব পরে স্কুলে আসতে নিষেধ করে। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ জারি করে পোশাক বিধি। ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, ক্রমশ পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, এই জুন মাসের পাঁচ তারিখ কলেজ থেকে ইস্তফা দিতে ‘বাধ্য’ হন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সানজিদা লেখেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষের হিজাব-বিরোধী নীতির জন্যই পদত্যাগ করতে হচ্ছে আমাকে। ইরানে যে হিজাব বিরোধী আন্দোলন চলছে তাকে সমর্থন জানাই। আইনের ছাত্র ও শিক্ষক হিসেবে আমি মনে করি, ধর্মনিরপেক্ষ দেশে কী পরব তা কেউ ঠিক করে দিতে পারে না। কিন্তু, কলেজ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে একবারেই অনমনীয় ছিল। তাই বাধ্য হয়েই আমি চাকরি থেকে ইস্তফা দিই।’
বীরভূম জেলার রামপুরহাটের মেয়ে সানজিদা। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁকে হিজাব পরতে নিষেধ করে। এরই মধ্যেই রাজ্যের সংখ্যালঘু কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন সানজিদা। কমিশনের চেয়ারপার্সন হাসান আহমেদ ইমরান বলেন, ‘আমরা অবশ্যই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানতে চাইব।’
এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন পুলিশকর্তা হুমায়ুন কবির। এই বিষয়ে এলজেডি ল কলেজের পরিচালন সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করে আলোচনাও করেছেন হুমায়ুন কবীর। তাতে সমাধানের উপায় বেরিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি শুনেই আমার খারাপ লেগেছে। কারণ ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এই জিনিস চলতে দেওয়া যায় না। তাই নিজেই উদ্যোগী হয়েছি। সমাধানের সূত্রও পাওয়া গেছে। তাতে আমি খুশি।’
কলেজের চেয়ারম্যান গোপাল দাস জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠানের পোশাক-বিধির কথা। কর্মীদের পোশাকী ট্রাউজ়ার্স, শাড়ি, সালোয়ারের কথা বলা আছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ড্রেস কোডে ধর্মীয় কিছু পরা যাবে না।’