বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেছেন ওই পদে জায়েদ খানের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনি এ আবেদন করেন।
নিপুণের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন সকালে ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর জানিয়েছিলেন, হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আজই আমরা আপিল ফাইল করবো। প্রস্তুতি প্রায় শেষ দিকে।
গতকাল বুধবার চলচিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দিয়েছিল, রায়ে সেটিকে অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত।
রায় ঘোষণার পর গতকালই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আপিল করার কথা জানিয়ে নিপুণ সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্টে আমি ন্যায়বিচার পাইনি। আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।
গত ২৮ জানুয়ারি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচন হয়। প্রাথমিক ফলাফলে সাধারণ সম্পাদক পদে ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় জায়েদ খানকে। পরে জায়েদের বিরুদ্ধে ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনা’সহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ আনেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ। এমনকি এ পদে পুনরায় ভোটের দাবিও তোলেন।
নিপুণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জায়েদ খানের পদ বা প্রার্থিতা বাতিল হবে কি না- সে বিষয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে এফডিসিতে বসেন শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ড। এরপর বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন।
এরপরই আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন জায়েদ খান। গত ৭ ফেব্রুয়ারি আপিল বোর্ডে প্রার্থিতা বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তিনি। রিটের শুনানি নিয়ে আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত ওইদিনই স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের সেই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল আবেদন করেন নিপুণ। ৯ ফেব্রুয়ারি আপিল শুনানি শেষে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। একইসঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থিতাবস্থা জারি করা হয়। এসময়ের মধ্যে জায়েদ-নিপুণ কেউ সম্পাদকের চেয়ারে বসতে পারবেন না বলে জানানো হয়।
এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
পিএসএন/এমঅাই