সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে গ্রামের বিভিন্ন মানুষের কাছ টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় এক প্রতারক যুবককে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত। এছাড়া ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। তবে এই মামলার আসামি পলাতক আছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মোজাফফর হোসেন রনি (২৫)। তার বাড়ি রংপুরের পঞ্চগড়ে। তিনি দেবীগঞ্জ থানার ভণ্ডপাল গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রনিকে আলাদা তিনটি ধারায় মোট ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এরমধ্যে একটি ধারায় ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। অপর ধারায় ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আরও একটি ধারায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ২ লাখ টাকা। অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম জানান, প্রতারণার এ ঘটনা ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে সংঘঠিত হয়েছে। অভিযুক্ত মোজাফফর হোসেন রনি তার এক সহযোগীর মাধ্যমে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার বেশ কিছু লোকজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেন। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর সে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর নম্বরগুলো বন্ধ করে দেন। পরে এই চক্রের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে র্যাব-৫। তারা ঢাকার হাতিরঝিল এলাকা থেকে মোজাফফর হোসেন রনিকে আটক করে। কিন্তু জামিনে মুক্ত হওয়ার পর থেকে রনি পলাতক। এ ঘটনায় র্যাব-৫ এর উপ-পরিদর্শক রেজাউল করিম বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলায় ইয়াসিন আলী নামের আরও এক আসামি ছিল। তবে তদন্ত শেষে পুলিশ মোজাফফর হোসেন রনিকে একমাত্র আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করে আদালত চার্জশিট দেয়।
আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার পলাতক রনির বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণা করা হয়। একটির সাজার মেয়াদ শেষের পর অন্যটি কার্যকর হবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। রায় ঘোষণার পর আদালতের বিচারক রনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি।
পি এস / এন আই