রাজধানীর করোনা হাসপাতালগুলোতে সাধারণ শয্যার সংকট কেটে গেছে। তবে এখনও মুমূর্ষু রোগীদের জন্য ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) শয্যার সংকট দেখা গেছে। যদিও আগের মতো আইসিইউ শয্যার জন্য এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিয়ে স্বজনদের দৌড়ঝাঁপ তেমন নেই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুরোধে মাসাধিককাল বিধিনিষেধসাপেক্ষে লকডাউনের সুফল হিসেবে সারাদেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু কিছুটা কমেছে। করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৩২ শতাংশ থেকে ১৯ শতাংশে নেমেছে। দৈনিক মৃত্যুও দুইশোর নিচে নেমে এসেছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ কমে গেছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা।
লকডাউন শেষে গত ১১ আগস্ট থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত খুলেছে। সকল প্রকার গণপরিবহন, মার্কেট, শপিংমল ও গার্মেন্টসসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হয়েছে। তবে শতভাগ মানুষ মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে সংক্রমণ ও মৃত্যু ফের বৃদ্ধির আশঙ্কা স্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ববিদদের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা সম্পর্কিত বুলেটিনের ১৭ আগস্টের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজধানীতে সরকারি পর্যায়ে ১৭টি ও বেসরকারি পর্যায়ে ২৯টিসহ ৪৬টি করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সর্বমোট ছয় হাজার ৩৩৪টি শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে সরকারি ১৭টি হাসপাতালে চার হাজার ২৭২টি ও বেসরকারিতে দুই হাজার ৬২টি। সরকারি-বেসরকারি ছয় হাজার ৩৩৪টি শয্যার মধ্যে তিন হাজার ১৬৬টি অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ খালি রয়েছে।
তবে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যার সংকট এখনও রয়ে গেছে। দেশে সবমিলিয়ে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৮৯৩টি। সরকারি হাসপাতালে ৩৮২টি ও বেসরকারিতে ৫১১টি। বর্তমানে আইসিইউ শয্যা খালি রয়েছে ২৭৬টি। সরকারি হাসপাতালে ৩৮২টির মধ্যে ৩০টি ও বেসরকারিতে ৫১১টির মধ্যে ২৪৬টি খালি রয়েছে।
এছাড়া সরকারি-বেসরকারি ৭০১টি এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেনসি ইউনিট) শয্যার মধ্যে খালি রয়েছে ২০৪টি। সরকারি হাসপাতালে ৪৩৫টির মধ্যে ৮২টি ও বেসরকারি ২৬৬টির মধ্যে ১২২টি শয্যা খালি রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা মেডিকেল কলেজে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল-২ ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতো জরুরি বিভাগের সামনে অ্যাম্বুলেন্সের সেই ভিড় নেই। রোগীর স্বজনদের দৌড়ঝাঁপ করতেও দেখা যায়নি। জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মোট ২৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।