সরকারি দায়িত্ব যথাযথ পালন না করা, অফিসের আদেশ, নির্দেশ অমান্য করা, চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনা ও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া পরিদর্শন কেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারি মলিক শফিকুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বুধবার (৭ জুন) আবহাওয়া অফিসের পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে বরখাস্ত করা হয়।
মলিক শফিকুল ইসলাম খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার উত্তর সলুয়া গ্রামের মলিক আব্দুস সবুরের ছেলে। স্ত্রী ফারজানা রহমান নগরঘাটা কালিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হওয়ার সুবাদে বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় বসবাস করেন।
বরখাস্তের চিঠি ও সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে মলিক শফিকুল ইসলাম সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসে সহকারি আবহাওয়া কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। ২০১০ সালে নিজের বোন সবুরা খাতুনকে সচিব পরিচয়ে জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ও লাবসা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের ছেলেকে চাকুরি দেওয়ার নাম করে ১০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে মলিক শফিকুলের বিরুদ্ধে। উপায় না দেখে র্যাব এর শরনাপন্ন হন আব্দুল আলিম। একপর্যায়ে র্যাব সদস্যরা পাটকেলঘাটা থানাধীন ধানদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শার্শা গ্রামের শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা তবিবুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালালে শফিকুল কৌশলে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে চট্টগ্রামে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়। ২০১৭ সালে সে আবারো সাতক্ষীরায় বদলী হয়ে আসে। বোন ফারজানা রহমানকে সচিব পরিচয়ে ভাই মলিক রবিউলের সহযোগিতায় চাকুরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন লোকজনকে প্রতারণা, নিয়মিত অফিস না করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০২০ সালের ১৭ আগস্ট তাকে কক্সবাজারে বদলী করা হলেও সে যোগদান করেনি। খুলনার ডুমুরিয়ার সাত যুবককে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে ৩৭ লাখ টাকা প্রতারণার মামলায় (সিআর-২১৩/২০) ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর মলিক শফিকুল ইসলাম জেলে যান। এ ছাড়া সাতক্ষীরায় চাকুরি করাকালীন চাকুরি দেওয়ার নামে সাড়ে চার লাখ টাকা প্রতারণা করে অফিসের সরকারি চেক দেওয়ার ঘটনায় চেক ডিজঅনারের মামলায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে খুলনা অফিসে কাজ করার সময় ২০২১ সালের ১৭ ফেব্র“য়ারি অসদাচরণের অভিযোগ ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিসের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চাকুরি থেকে অপসারণ বা বিধিতে বর্ণিত অন্য কোন গুরুদণ্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণক্রমে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে বিধিমালা ৭(৯) অনুযায়ি সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ৩১ মে তাকে চিরস্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।