আজকাল এমন কিছু রোগী আসে যাঁদের বয়স চল্লিশ-বিয়াল্লিশ বছর। তাঁদের ভাষ্য, ইদানীং মাসিক হয় না। কেমন অস্থির অস্থির লাগে! কোনো কিছুতে স্বস্তি পাই না। ঘুম হয় না। মাঝেমধ্যে গরম একটা ভাপ আসে, ঘাড়-মাথাজুড়ে। কেমন যেন নিরাপত্তাহীনতা বোধ করি। অল্পতেই মন খারাপ হয়ে যায়। মাঝেমধ্যে কিছু করতে ইচ্ছা করে না।
কেন এমন হয়?
সাধারণত মেনোপজ পঞ্চাশের পরে হয়। তবে কারো কারো চল্লিশের আগেও হতে পারে। চল্লিশ বছর বয়সের আগে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে তাকে প্রি-ম্যাচিউর ওভারিয়ান ফেইলিয়র বা ইনসাফিশিয়েন্সি বলে। অর্থাৎ মেনোপজ চলে আসে আগেভাগেই। এর ফলে ওভারিয়ান হরমোন ইস্ট্রোজেন কমে যায়। অস্থির লাগা শুরু হয়।
কারণ
এমন কিছু রোগ আছে, যেগুলো থাকলে অল্প বয়সে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। যেমন—জেনেটিক ডিজিজ-টার্নারস সিনড্রোম, অটোইমিউন ডিজিজ-লুপাস, থাইরয়েড, ইনফেকশন-মামস, টিবি, আয়াট্রজেনিক-কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, মেটাবলিক, পরিবেশগত-স্মোকিং, পেস্টিসাইড ইত্যাদি। অজানা কারণেও পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
লক্ষণ
♦ হট ফ্লাশ
♦ খিটিমিটি মেজাজ
♦ নিদ্রাহীনতা
♦ অস্থিরতা
রোগ নির্ণয়
উল্লেখিত উপসর্গ দেখা দিলে একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ কনসাল্ট করলে এবং প্রয়োজনীয় টেস্ট করলে বুঝতে পারা যায়। সময়ের চেয়ে অসময়ের জ্বর ভোগায় বেশি। তেমনি সময়ের আগে মেনোপজ এলে স্বাভাবিক মেনোপজের চেয়ে বেশি ভুগতে হয়।
চিকিৎসা
উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা। যে কারণে এমন হয়, সে কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসা করলে অনেক সময় ইমপ্রুভ হয়। তবে মেনোপজের উপসর্গ একবার চলে এলে সাধারণত ডাইভার্ট ব্যাক করে না। সে জন্য অসহনীয় উপসর্গ বেশি হলে, ওষুধে কাজ না হলে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি লাগতে পারে। তবে সবার আগে জরুরি পর্যাপ্ত কাউন্সিলিং। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করা। হরমোন নিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া এবং নিয়মিত বিরতিতে ফলোআপে থাকা জরুরি।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. ছাবিকুন নাহার
স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ইনফার্টিলিটি
স্ত্রী, প্রসূতি ও গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সার্জন
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, ঢাকা।
পিএসএন/এমঅাই