রোহিত শর্মার সঙ্গে একটা জায়গায় ভীষণ মিল সঞ্জু স্যামসনের। মিডল অর্ডার থেকে প্রমোশন পেয়ে ওপেনিংয়ে নামার পর দু’জনই দারুণ সফল। রোহিতের মতো সঞ্জুও বিরল প্রতিভা হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু মিডল অর্ডারে দু’জনই ভীষণ অধারাবাহিক ছিলেন। ওপেন করতে নামার পরই যেন তাদের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। রোহিত এখন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ব্যাটার। সঞ্জুও কি পারবেন তেমন কিছু করতে?
রোহিতকে ওপেনার বানান মূলত সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০০৭ সালে রোহিতের ওয়ানডে অভিষেক হয় মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে। তবে সেই পজিশনে ভালো করতে পারছিলেন না তিনি। মাঝেমধ্যে ঝলক দেখালেও ছিলেন ভীষণ অধারাবাহিক। এই অধারাবাহিকতার জন্য তাঁর ক্যারিয়ারই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল। ক্যারিয়ার বাঁচাতে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে রোহিতকে ওপেন করতে পাঠান ধোনি। এর পরের ইতিহাস সবার জানা।
প্রভিতার ঝলক দেখানোর জন্যই মাত্র ২০ বছর বয়সে ২০১৫ সালে টি২০ দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল সঞ্জু স্যামসনের। গত ৯ বছরে ৩০ টি২০তে ওপেনিং ছাড়া তিন থেকে সাত পর্যন্ত প্রতিটি পজিশনে ব্যাট করেছেন তিনি। কিন্তু অধারাবাহিকতার জন্য কোথাও জায়গা পাকা করতে পারেননি। অনেকটা শেষ সুযোগ হিসেবে গত অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি২০ সিরিজে ওপেন করানো হয় তাঁকে। রোহিতের মতো ওপেনিংয়ে নামার পর তাঁরও ব্যাটও হেসে ওঠে। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম দু্ই টি২০তে অবশ্য সফলতা পাননি। তবে তৃতীয় ম্যাচে ৪৭ বলে ১১১ রানের ইনিংস খেলেন। এর পর গতকাল ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫০ বলে ১০৭ রান করেন তিনি। টি২০তে টানা দুই সেঞ্চুরি করা প্রথম ভারতীয় এবং ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ ব্যাটার তিনি।
রোহিতের সফলতার পেছনে যেমন তৎকালীন অধিনায়ক ধোনির অবদান ছিল, ঠিক তেমনি সঞ্জুর পেছনেও বর্তমান অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের ভূমিকা রয়েছে। ভারতীয় অধিনায়ক নাকি আগেই তাঁকে জানিয়েছিলেন, সামনের সাত ম্যাচ খেলছেন তিনি। দিলীপ ট্রফিতে খেলার সময় তাঁকে এ নিশ্চয়তা দেন সূর্য। গতকাল সেঞ্চুরির পর জিও সিনেমাকে সে কথা জানান সঞ্জু, ‘দিলীপ ট্রফিতে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলছিলাম, সূর্য ছিল প্রতিপক্ষ দলে। ম্যাচ চলার সময় সূর্য আমাকে বলেছে, আগামী ৭ ম্যাচ তুমি খেলছো (বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪)। এই ৭ ম্যাচ তুমি ওপেন করবে। যাই হোক না কেন, আমি তোমার পাশে থাকব।’এর পর সঞ্জু যোগ করেন, ‘ক্যারিয়ারে এই প্রথম আমি একটা পরিষ্কার বার্তা পাই যে, আামার হাতে ৭টি ম্যাচ আছে। অধিনায়কের কাছ থেকে এমন বার্তা ও আত্মবিশ্বাস পেলে মাঠেও এর অন্যরকম ছাপ পড়ে।’