শীতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কমে যায়। এ কারণে এ সময় শরীর, হাত-পা খসখসে হয়ে যায়। কারো কারো হাত-পা ফেটে রক্ত পড়া শুরু হয়। তাই শীতের সময়টায় বিশেষভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে।
আকাঙ্ক্ষা’স গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড-এর স্বত্ত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ জুলিয়া আজাদ জানান, শীতে পুরো শরীরের যত্নে গোসলের পরপরই একটি বিশেষ তেলের মিশ্রণ লাগাতে হবে। এজন্য অলিভ অয়েল, এক কাপ কোকোনাট অয়েল, এক কাপ ক্যাস্টর অয়েল একসঙ্গে মেশাতে হবে। এর সঙ্গে ৬-৭টি ভিটামিন ই ক্যাপ নিতে হবে। এই মিশ্রণটি বডি অয়েল হিসেবে ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হবে না।
তিনি জানান, ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসার পর এই মিশ্রণটি না লাগিয়ে, গোসল শেষে সাথে সাথেই লাগানো উচিত। আবার রাতে এই অয়েলের মিশ্রণ লাগিয়ে ঘুমালে হাত-পা ফাটার সমস্যা থাকবে না। এই মিশ্রণটি যেকোনো ত্বকে ব্যবহার করা যাবে।
লোশন বা ক্রিমও ত্বকের জন্য ভালো। তবে তেল ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে বেশি আর্দ্রতা জোগায়। তেলে থাকে ফ্যাটি অ্যাসিডসহ নানাবিধ উপকরণ, যা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। শরীরে সঠিক পদ্ধতিতে তেল ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। তেল রোমকূপে প্রবেশ করে ত্বকে পুষ্টি জোগায়। আর ত্বকের বাইরে এক প্রকার বর্ম তৈরি করে। ফলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, বাইরের আবহাওয়াও তেলের এই বর্ম ভেদ করে ত্বকে প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে বলিরেখা পড়ে না। পাশাপাশি, ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও টান টান।
কোন তেল বেছে নেবেন?
অর্গান অয়েল: ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ অর্গান অয়েল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সহায়ক। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থেকে ত্বককে বাঁচাতেও এই তেল সাহায্য করে।
নারকেল তেল: অ্যন্টিঅক্সিড্যান্ট এবং ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ নারকেল তেল সারা বছরই ব্যবহার করা যায়। শুষ্ক ত্বকের জন্য এ তেল উপকারী। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ত্বকের সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে।
জোজাবা অয়েল: জবা ফুল থেকে তৈরি এই তেল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ইলফ্লেমেটারি উপাদান। এটি ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি সংক্রমণ এবং প্রদাহ কমাতেও সহায়ক।
আমন্ড অয়েল: আমন্ড অয়েলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ই রয়েছে। তাই এ তেলটি ত্বক কোমল ও আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে।
এ ছাড়াও ল্যাভেন্ডার অয়েল, অলিভ অয়েলসহ বিভিন্ন তেল ব্যবহার করা যাবে। চাইলে কেউ অলিভ অয়েল, জোজোবা অয়েল বা নারকেল তেলের সঙ্গে ল্যাভেন্ডারসহ একাধিক এসেনশিয়াল অয়েলও মিশিয়ে নিতে পারেন।
কারা ত্বকে তেল ব্যবহার করবেন
যাদের ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক, নখ দিয়ে হাতে বা পায়ে আঁচড় কাটলে সাদা দাগ হয়ে যায়, তারা ত্বকে তেল মালিশ করবেন। এক্ষেত্রে অ্যাভোকাডো, নারকেল, অলিভ কিংবা আমন্ড অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। স্বাভাবিক ত্বকেও তেল ব্যবহার করতে পারবেন। তবে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা তেল এড়িয়ে যেতে পারেন।