১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধে বর্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণের দিন। ইতিহাসের এই দিনটি বাঙালিদের জন্য একটি বেদনার দিন। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কময় দিন।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের পরাজয়ের আভাস পেলে বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার ঘৃণ্য চক্রান্ত করে হানাদার বাহিনী। বিশেষ করে ১৪ ডিসেম্বর তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাংলাদেশের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করে তারা।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যার দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ইটখোলা ও মিরপুরের বধ্যভূমিসহ ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়।
দিবসটি উপলক্ষে সকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সেখানে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সেখান থেকে তাঁরা রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
খুলনায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি :
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে খুলনা মহানগর বিএনপি, এদিন শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টায় গল্লামারী স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ। বেলা সাড়ে ১১টায় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন মহানগর ও ওয়ার্ড বিএনপি’র সকল দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, দলীয় পতাকা ও কালো পতাকা থাকবে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, সকাল সাড়ে দশটায় তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে কালোব্যাজ ধারণ, ১০ টা ৪০ মিনিটে উপাচার্য কর্তৃক জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন, পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে শহিদ মিনারে শোভাযাত্রা সহকারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বেলা ১১ টা ১৫ মিনিটে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আলোচনা সভা, বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর পক্ষ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর সূর্যোদয়ের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের বাসভবন এবং আবাসিক হলসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন (অর্ধনমিত) ও কালো পতাকা উত্তোলন, বিকাল ৩ টায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা, বাদ আসর ০৪ঃ২৫ টায় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত হবে।
খুলনা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে গল্লামারী স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ এবং শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় ক্লাবের হুমায়ূন কবীর বালু মিলনায়তনে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।