বাগেরহাটের শরণখোলায় একটি মাছের ঘেরে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘের দেখা মিলেছে। বৃহস্পতিবার (০৫ মে) রাত সোয়া ৯টায় সুন্দরবন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামের শাহিন খান নিজ ঘেরের মধ্যে বাঘটিকে দেখতে পান।
বাঘটি শাহিন খানের ঘেরের মধ্যে শুয়ে ছিল। পরে বিষয়টি সবাইকে জানালে মসজিদে মসজিদে মাইকিং করা হয়। এলাকাবাসী ঘেরের পাশে ভিড় জমায়। এরপর বাঘটি ঘের থেকে লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যায়।
এদিকে বাঘটি সুন্দরবনে গেল কিনা তা খুঁজে দেখতে বন কর্মকর্তা ও বনঅপরাধী রক্ষীরা শুক্রবার (০৬মে) সকালে খেজুরবাড়িয়ায় গ্রামে পৌঁছেছে। তারা এলাকার বিভিন্ন বাগান ও ঝোঁপঝাড় তল্লাশি করছেন।
শাহিন খান বলেন, রাতে বাবাকে নিয়ে ঘেরে যাই। হঠাৎ ঘেরের মধ্যে কিছু একটা শোয়া অবস্থায় দেখতে পাই। কিন্তু দূর থেকে ঠিক কী বোঝা যাচ্ছিল না। পরে কিছুটা কাছে যেয়ে দেখি বাঘ। আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম। এরপর লোকজনকে জানালে তারা মাইকিং করেন। লোকজন যখন আলো নিয়ে বাইরে বের হয়েছে, তখন বাঘটি কোথায় যেন চলে গেছে।
শাহিন খানের বাবা স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন খান বলেন, সুন্দরবন থেকে আমাদের গ্রাম দুই কিলোমিটার দূরে। মাঝে ভোলা নদী ও ধানসাগর গ্রাম। আগে ধানসাগর গ্রামে বিভিন্ন সময় বাঘ আসলেও, আমাদের গ্রামে দীর্ঘদিন পরে এবার বাঘ আসলো। স্থানীয় লোকজন ভয় পেলেও বাঘ আটকানো বা মারার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে চেষ্টা করা হয়েছে যাতে বাঘটি দ্রুত বনে চলে যায়। আমরা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দিয়েছি।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুস সবুর বলেন, দুইজন লোক বাঘ দেখেছে এমন খবরে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যে স্থানে বাঘটি ছিল সেখানের মাটি শুকনো। যার ফলে কোন পায়ের ছাপ পাওয়া যায়নি। বাঘটি ওই স্থানের আশপাশ এলাকায় থাকার মতো যে সব জায়গা সেখানে খোঁজা হয়েছে।
ওই এলাকায় বনরক্ষী ও ভিটিআরটি সদস্যরা অবস্থান করছেন। যদি বাঘটিকে আবার দেখা যায়, তাহলে দ্রুত বনে ফিরিয়ে আনার সব প্রস্তুতি রেখেছি আমরা।
স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুস সবুর আরও বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময় ধানসাগর এলাকায় বাঘ আসার খবর থাকলেও এই প্রথম খেজুরবাড়িয়া গ্রামে বাঘ প্রবেশের খবর পাওয়া গেল।
পিএসএন/এমঅাই