উপচে পড়া ভীড় সামাল দিতে ডাক্তার ও নার্সরা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন
রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুষ করায় নার্স কে শোকজ
আসাদুজ্জামান মিলন ,শরণখোলা থেকে
শরণখোলায় ডায়রিয়া পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। গত ২৪ ঘন্টায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে ২৩ জন ডায়রিয়া রোগী এসেছে । ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সকল বেড পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছে। সাধারন রোগীদের পাশাপাশি হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীদের উপচে পড়া ভীড় সামাল দিতে নার্স ও ডাক্তাররা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে হাসপাতালে কর্তব্যরত এক নার্স চিকিৎসাধীন এক রোগীর শরীরে ভুলক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুষ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ ঘটনায় ঐ সময় কর্তব্যরত নার্স শামীমা আক্তার কে শোকজ করা হয়েছে বলে বিভাগীয় সূত্রে জানাগেছে।
বুধবার (৬এপ্রিল) সকালে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীদের উপচে পড়া ভীড়। ডায়রিয়া ওয়ার্ড কানায় কানায় পরিপূর্ন। বাধ্য হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছে। জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ হালদার জানান, শুধুমাত্র বুধবার সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নতুন করে ১৩ জন ডায়রিয়া রোগী এসেছে। মঙ্গলবার এসেছে ১০ জন। ক্রমেই ডায়রিয়া রোগীদের ভীড় বাড়ছে। হঠাৎ করেই ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ডাক্তার ও নার্সরা রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন। মঙ্গলবার সারারাত রোগীদের সেবা দিয়ে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়ায় বুধবার সকালে কর্তব্যরত নার্স শামিমা আক্তার ভুলক্রমে আবু হানিফ হাওলাদার (৬০) নামে এক রোগীর শরীরে দুই মাস আগে মেয়াদ শেষ হওয়া একটি স্যালাইন পুষ করে দেন । এতে রোগীর শরীরে জ্বালা-যন্ত্রনা শুরু হয়ে বলে স্বজনরা অভিযোগ করেন।
রোগী ছেলে জাকারিয়া হাওলাদার জানান, সকাল পৌনে ৭টার দিকে শামীমা নামে এক নার্স তার বাবার শরীরে হাসপাতালের সরকারি স্যালাইন পুষ করেন। স্যালাইনের প্রায় তিনের দুই ভাগ শেষ হয়। এমন সময় তার ছোট বোন হাসিনা বেগম স্যালাইনের গায়ে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ০২/২০২২ লেখা দেখতে পান। পরে নার্সকে ডেকে বিষয়টি জানালে দ্রæত স্যালাইন খুলে ফেলা হয়। স্যালাইন দেওয়ার পর থেকেই তার বাবার শরীরে জ্বালা-যন্ত্রনা শুরু হয় বলে জানান তারা।
হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এস এম ফয়সাল আহমেদ জানান, হানিফ হাওলাদার নামে ওই রোগী শরীরে জ্বালা-যন্ত্রনা নিয়েই হাসপাতালে আসেন। উচ্চ রক্তচাপও ছিল তার। এ অবস্থায় নার্স শামীমা স্যালাইনের মেয়াদ না দেখেই তার শরীরে পুষ করেছেন। তবে রোগী আবু হানিফ হাওলাদার বর্তমানে তিনি স্বাভাবিক আছেন। তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে ।
এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে নার্স শামীমা আক্তার কে শোকজ করা হয়েছে। তাকে এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের স্টোরে থাকা সকল স্যালাইনের মেয়াদ পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য স্টোর ইনচার্জ কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ।