যশোরে ডেভিলস ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস দিয়ে প্রতারণার চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন তিন ইরানী নাগরিক। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশি বিপুল পরিমান টাকা, অজ্ঞান করার সরঞ্জাম, প্রতারণায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা, এ চক্রের প্রধান হোতা ইরানের তেহরানের লতিফ মাসুফিরের ছেলে ফারিবোরয মাসুফি, খরাজ গহরদস্তের খালেদ মাহবুবী, তার ছেলে সালার মাহাবুবী, গোপালগঞ্জ জেলার ঘ্যানাসুর গ্রামের সরোয়ার শেখের ছেলে খোরশেদ আলম ও বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সাইদুল ইসলাম বাবু। সোমবার দুপুর সাড়ে তিনটায় যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন।
তিনি জানান, ৮ এপ্রিল অভয়নগর উপজেলার বর্ণী হরিশপুর বাজারে জালাল মোলার মার্কেটের শরিফুল ইসলামের মরিয়ম স্টোরের সামনে প্রাইভেটকার থামিয়ে অজ্ঞাত ৩/৪ জন লোক নামে। তাদের দু’জন দোকানে প্রবেশ করে। তাদের একজনের মাথায় টুপি, মুখে মাক্স, প্যান্ট, শার্ট পরিহিত ছিল। তারা আরবি ভাষায় কথা বলে নারিকেল তেল চান। এ সময় তারা শরিফুলের বাবার সাথে হ্যান্ড-শেক করেন এবং মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করে বাদীর বাবার মুখের কাছে নেয়। এ সময় শরিফুলের বাবা ঘোরের মধ্যে চলে যান। তিনি বিদেশি ওই ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে যান। বিদেশিরা তাকে যা বলেন, তাই শুনতে থাকেন শরিফুলের বাবা। এক পর্যায় দোকানে থাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর নগদ প্রায় ছয় লাখ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় প্রতারক চক্রেরা সদস্যরা। এ ঘটনায় অভয়নগর থানার মামলা করেন শরিফুল।
ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় পুলিশ সুপার প্রলয় ছমার জোয়ারদার ডিবির এলআইসি টিমের উপর তদন্তের দায়িত্ব দেন। প্রথমেই পুলিশ দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। এরপর প্রাইভেটকারের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সূত্র ধরে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। ডিবির এলআইসি টিমের কনস্টেবল আব্দুল বাতেনের দুরদর্শিতায় প্রতারক চক্রের দুই সদস্যের অবস্থান সনাক্ত করে পুলিশ। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ৭ মে সন্ধ্যায় ডিবির এস আই নূর ইসলাম ও মামলার তদন্ত কর্মর্ছা অভয়নগর থানার এস আই বিমান তরফদারের নেতৃত্বে একটি টিম ঢাকার ভাটারা থানা এলাকা থেকে খোরশেদ আলম ও সাইদুল ইসলাম বাবুকে আটক করে। তাদের দেয়া তথ্যে যশোরের সিটি প্লাজা আবাসিক হোটেল থেকে পুলিশ রাত ১০টা ২০ মিনিটে ওই তিন ইরানী নাগরিককে আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার ৩শ’ ৫৯ মার্কিন ডলার, ৩শ’ ২৫ ইন্ডিয়ান রুপি, ১৮ লাখ ৮০ হাজার ইরানী রিয়েল, ১শ’ ৮৫ নেপালী রুপি, এক হাজার ভিয়েতনামের কারেন্সি, বাংলাদেশি ৫৪ হাজার ৭শ’ টাকা, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, অজ্ঞান করার দু’টি পারফিউম, তিনটি পাসপোর্ট, সাতটি মোবাইল ফোন, দু’টি আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন আরও জানান, টাকার মধ্যে গন্ধযুক্ত কথিত ডেভিল ব্রেথ বা শয়তানের নিঃশ্বাস বলে এ চক্রের সদস্যরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতারণা চালিয়ে