মার্কিন বিমানবাহিনীর জন্য পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করবে বিমান নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং। নতুন প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমানের নাম দেওয়া হয়েছে এফ-৪৭। আর এই যুদ্ধবিমানগুলো শত্রুর জন্য ‘অদৃশ্য’ আতঙ্ক হবে বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনপিআর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।এতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে বোয়িং কোম্পানিকে এই যুদ্ধবিমান নির্মাণের ঠিকাদারি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সেখানে তিনি বিমানটি সম্পর্কে বলেন, ‘এগুলোর ক্ষমতা হবে অভূতপূর্ব। আমেরিকার শত্রুরা কখনোই (এগুলোকে) আসতে দেখবে না।’
নতুন প্রজন্মের এই যুদ্ধবিমানটির নাম এফ-৪৭ রাখার পেছনে একটি কারণও আছে। সেটি হলো- ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট। আর তাই যুদ্ধবিমানটির এই নাম নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘জেনারেলরা একটি নাম বেছে নিয়েছেন এবং এটি একটি সুন্দর সংখ্যা।’ যুদ্ধবিমানটির প্রশংসা করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে এর ধারেকাছেও কিছু নেই।’
নেক্সট জেনারেশন এয়ার ডমিন্যান্স বা এনজিএডি নামে পরিচিত এফ-৪৭ উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমানের ধারাবাহিকতা। অনুমান করা হচ্ছে, অতীতের সব প্রযুক্তির সঙ্গে এটিতে আরও বেশকিছু বাড়তি প্রযুক্তি যুক্ত করা হবে।
যদিও এই যুদ্ধবিমানটি সঠিক স্পেসিফিকেশন বা বৈশিষ্ট্য, দেখতে কেমন হবে বা সক্ষমতা কেমন হবে- সে বিষয়ে খুব কমই জানা যায়। তবে ট্রাম্প আভাস দিয়েছেন, ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানটি রাডারে ‘প্রায় অদৃশ্য’ হবে।
বোয়িংকে এই চুক্তির আওতায় কী পরিমাণ অর্থ দেওয়া হতে পারে, তার বিশদ বিবরণও এখনো অস্পষ্ট। যদিও বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, এই বিমানটি নির্মাণের খরচ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে সামরিক বিষয়ক ব্লগ সাইট দ্য ওয়ার জোন জানিয়েছে, চূড়ান্ত মূল্য কয়েকশ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।
যুদ্ধবিমানগুলোর জন্য পেন্টাগন কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় করবে সে বিষয়ে ট্রাম্পও কোনো ইঙ্গিত দেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকগুলোর জন্য অর্ডার দিয়েছি। আমরা দাম বলতে পারি না।’
এদিকে বোয়িংয়ের জন্য ট্রাম্পের এই ঘোষণা এক বিরাট অর্জন। একের পর এক জনসংযোগ সংকট এবং কর্মক্ষম ব্যর্থতা থেকে পুনরুদ্ধার করতে সংগ্রাম করতে থাকা কোম্পানিটির জন্য এই প্রকল্পটি আর্থিক পুনরুদ্ধারের একটি বড় সুযোগ।
কেননা, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ৭৩৭ ম্যাক্স বিধ্বস্ত হওয়া, ২০২৪ সালে দরজার প্লাগ ফেটে যাওয়া এবং কেসি-৪৬ রিফুয়েলিং ট্যাংকার প্রোগ্রামের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলোর কারণে ইতোমধ্যেই সংস্থাটির সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেন্ট লুইস পাবলিক রেডিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেন্ট লুইসে অবস্থিত বোয়িংয়ের উৎপাদন কারখানাতেই এফ-৪৭ তৈরি করা হবে।