লিভারের নানারকম রোগের মধ্যে লিভার সিরোসিসকে চূড়ান্ত পর্যায়ের একটি রোগ বলে মনে করা হয়। এটি একটি মারাত্মক ও অনিরাময়যোগ্য রোগ বলে চিকিৎসকরা মনে করেন। তাই এটির জন্য চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
কিন্তু এই রোগটি কেন হয়, আর লক্ষণগুলোই বা কী? লিভার সিরোসিসের লক্ষণগুলো দেখে নেওয়া যাক।
জন্ডিস : জন্ডিস নিজে কোনো রোগ নয়, বরং এটি রোগের লক্ষণ। লিভারের কোনো সমস্যার লক্ষণ হতে পারে এই জন্ডিস। লিভার থেকে নিঃসৃত হওয়া পিত্ত বিলিরুবিনের পরিমাণ বেশি হয় গেলে জন্ডিস হয়। লিভারে ক্ষত তৈরি হলেও লিভার শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না।
ওজন কমে যাওয়া : হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া ভালো লক্ষণ নয়। হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া এবং চেহারায় ব্যাপক পরিবর্তন অর্থাৎ শরীরের যেকোনো আকস্মিক পরিবর্তনই লিভারের রোগের কারণে হতে পারে। তাই কোনো কারণ ছাড়া হঠাৎ ওজন কমতে শুরু করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।
পা ও গোড়ালিতে জ্বালা : পা ও গোড়ালিতে মাঝেইমাঝেই জ্বালা ভাব হলে আগে থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শরীরে অ্যালবুমিন প্রোটিনের উৎপাদন কমে গেলে এই রকম সমস্যা হয়। এই প্রোটিন রক্তনালী থেকে অন্যান্য কোষে রক্তের ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তে এই প্রোটিন তরলের পরিমাণ কমে গেলে তা রক্তনালিকায় জমা হতে শুরু হয়। গোড়ালিতে বা পায়ের পাতায় হালকা জ্বালা অনুভব হলে আগে থেকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
পেট ফাঁপা : দীর্ঘদিন যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তলপেটে তরল জমা হয়ে তারা পেট ফাঁপার সমস্যায় ভুগতে পারেন। নিয়মিতই যদি এমন সমস্যার মুখে পড়তে হয় তবে সতর্ক হওয়া উচিৎ।
কালশিটে : লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হলে সামান্য আঘাতেই শরীরে কালশিটে পড়তে পারে। অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে লিভার সিরোসিস হয়। লিভারের যে প্রোটিন রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে, সেই প্রোটিনের উৎপাদন কমিয়ে দেয় এই রোগ। অবশ্য অন্যান্য আরও কারণে এই সমস্যা হতে পারে।