বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় গাফিলতি বা দায় ছিল এমন ১৩ জন কর্মকর্তাকে শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একইসঙ্গে এই ঘটনায় জড়িত আট দেশের অন্তত ৭৬ ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে সিআইডি।
ছয় বছর আগে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। এ অর্থ যায় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজাল ব্যাংকের একটি শাখায় চারটি ভুয়া হিসাবে। সেখান থেকে দ্রুত অর্থ উত্তোলন করা হয়। পরে চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে মাত্র দেড় কোটি ডলার পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়। এখনো ৫৬১ কোটি টাকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা চলছে। ঘটনার ৩৯ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি, মানি লন্ডারিং ও সাইবার অপরাধ দমন আইনের ধারায় মামলা করা হয়। পরে ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে।
সিআইডি বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তত ১৩ কর্মকর্তার গাফিলতি রির্জাভ চুরির সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে তৎকালীন গভর্নর, তৎকালীন একজন নির্বাহী পরিচালক, তৎকালীন একজন মহাব্যবস্থাপক, তৎকালীন তিনজন উপপরিচালক, তৎকালীন চারজন যুগ্ম পরিচালক, তৎকালীন তিনজন উপমহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের কর্মকর্তা ছিলেন। এদের দু’জন বর্তমানে অবসরে গেছেন আবার পদোন্নতি পেয়ে কেউ কেউ ডেপুটি গভর্নর পর্যন্ত হয়েছেন।
এ ছাড়া এ ঘটনায় বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, জাপান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও হংক – এই আট দেশের ৭৬ নাগরিক জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি।
এ বিষয়ে সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. হুমায়ুন কবির একটি জাতীয় দৈনিককে জানান, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকি পাঁচ দেশ অভিযুক্ত নাগরিকদের বিষয়ে সিআইডিকে তথ্য দিয়েছে।
সিআইডির তদন্তের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, একজন গভর্নর একা সিদ্ধান্ত নেন না। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক তো আমার বিরুদ্ধে মামলা করেনি।
মামলার অগ্রগতির বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বলেন, চুরির ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৫৬১ কোটি টাকা উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সাউদার্ন জেলা আদালতে রিভিউ মামলার রায় হলে মতিঝিল থানায় দায়ের করা রিজার্ভ চুরির মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। এখন অভিযোগপত্র দিলে টাকা ফেরত আনতে বেগ পোহাতে হতে পারে।
পিএসএন/এমঅাই