ওজন কমানোর সাধারণ একটি কৌশল হল কম ক্যালরি গ্রহণ। কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলো ক্ষুধা কমায়।
যেগুলো খেলে খাওয়ার পরিমাণ কমে। ফলে ক্যালরি গ্রহণ করা হয় কম।
এই বিষয়ে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা ভিত্তিক পুষ্টিবিদ জিলিয়ান বার্কইউম্ব বলেন, “জিএলপি-ওয়ান রিসিপটর অ্যাগোনিস্ট’ ধরনের ওষুধগুলো হজম ধীর করে আর মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় পেট এখনও ভরা। মানে পেটভরা অনুভূত হওয়া মানে মস্তিষ্ক ভাবে এখন খাবার দরকার নেই। ফলে খাওয়া কম হয় যে কারণে ক্যালরি গ্রহণও কমে। ফলাফল হল ওজম কমা।”
তবে কিছু খাবারে প্রাকৃতিভাবেই এই ধরনের গুণ রয়েছে। যেগুলো দীর্ঘক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দিতে পারে, ফলে ক্ষুধাভাব কমে।
তাই ওজন কমাতে এসব খাবার সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ওটস
দ্রবণীয় আঁশে ভরপুর, বিশেষ করে ‘বেটা-গ্লুকান’ যা হজম প্রক্রিয়া ধীল করে আর বাড়ায় পরিতৃপ্তির অনুভূতি।
পাকস্থলীতে জেলধর্মী পদার্থ তৈরি করে পেট খালি হতে দেরি করায়। পেটভরা অনুভূতির সময় বাড়ায়। তাই দিনের শুরুতে একবাটি ওটস সারাদিন পরিতৃপ্তি থাকার অনুভূতি বাড়াতে পারে।
টক দই
উচ্চ মাত্রায় প্রোটিন থাকার কারণে নাস্তা হিসেবে চমৎকার খাবার। যা ক্ষুধা কমায়। আর দীর্ঘক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দিতে পারে।
কার্বোহাইড্রেইটের তুলনায় প্রোটিন হজম হতে সময়। কার্ব গ্রহণের ইচ্ছাও কমে।
এই কারণে মিষ্টিহীন বা টক দই খাওয়া উপকারী। আর এতে প্রোটিনের মাত্রাও বেশি থাকে। আর মিষ্টির খাওয়ার প্রবণতা কমাতে টক দইয়ের সাথে বাদাম বা ফল খাওয়া উপকারী।
ডাল
আঁশ ও প্রোটিনের উৎকৃষ্ট উৎস। দুয়ে মিলে পেটভরা থাকে দীর্ঘক্ষণ। ক্ষুধাভাব কমায়।
আর ডালে থাকা আঁশ হজম প্রক্রিয়াও ধীর করে। সব মিলিয়ে ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
আপেল
এই ফলে থাকা ‘পেক্টিন’ এক ধরনের দ্রবণীয় আঁশ যা পেটভরায় দ্রুত আর ধীর করে হজমক্রিয়া।
খাওয়ার আগে একটা আপেল খেতে পারলে সার্বিকভাবে বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমে। আর প্রাকৃতিক শর্করা থাকায় মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও কমায়।
সেদ্ধ ডিম বা একমুঠ কাঠবাদামের সাথে আপেল খাওয়া উপকারী।
বার্লি
ওটস’য়ের মতোই বার্লি একটি পূর্ণ শষ্য যাতে ‘বেটা-গ্লুকান’ আঁশ উচ্চ মাত্রায় থাকে। এই ধরনের আঁশ হজম প্রক্রিয়া ধীর করে, ক্ষুধাভাব নিয়ন্ত্রণ করে দীর্ঘক্ষণ পেটভরা অনুভূতি দিতে পারে।
সুপ বা সালাদের সাথে বার্লি খাওয়ার অভ্যাস করলে ক্ষুধা লাগবে কম।
চিয়া বীজ
আঁশে পরিপূর্ণ ‘সুপার ফুড’ হিসেবে পরিচিত। পানিতে ভিজিয়ে রাখলে দশগুন পর্যন্ত ফুলে ওঠে।
চিয়া বীজ খাওয়ার ফলে পেটে গিয়ে তরল শোষণ করে স্ফীত হয়। ফলে আক্ষরিক অর্থেই পেট অল্পতে ভরা অনুভূত হয় আর হজম ধীর করে।
এক টেবিল-চামচ চিয়া বিজের সাথে টক দই, স্মুদি বা ওটসের সাথে খেলে আরও বেশি পরিতৃপ্তি পাওয়া যাবে।
ডিম
প্রোটিনে ভরপুর একটি খাবার। আর পরিতৃপ্তির হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে পেটভরা অনুভূতি দেয়।
‘ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ অস্ট্রালিয়া’র করা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকালের নাস্তায় ডিম খায় তারা সারাদিনে ক্যালরি গ্রহণ করে কম। তাই খাদ্যতালিকায় এই খাবার রাখলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
গাঢ় সবুজ পত্রল সবজি
যে কোনো ধরনের শাক বা পাতাকপিতে যেমন থাকে পুষ্টিগুণ তেমনি থাকে পানির পরিমাণ বেশি। পাশাপাশি মিলবে আঁশ। এগুলো বেশি মাত্রায় ক্যালরি গ্রহণ ছাড়াই পেটভরা অনুভূতি দেয়।
আঁশ হজমক্রিয়া ধীর করে, দ্রুত পেটভরা সংকেত পাঠায় মস্তিষ্কে। ফলে খাওয়া হয় কম।
প্রোটিনের সাথে যেমন- মুরগি বা মাছ দিয়ে শাক খেলে সার্বিকভাবে দেহের উন্নতি হয়। পাওয়া যায় সুষম পুষ্টিগুণ।