ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির গ্রুপিং রাজনীতি প্রকট হয়ে উঠছে। গ্রুপিংয়ের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে শনিবার সন্ধ্যায় যুবদল নেতা হাসেম মোল্লা, রফিকুল ইসলাম, মাসুদ রানাসহ মোট চারজনকে পিটিয়ে আহত করেছেন ছাত্রদল নেতা লিখন সরকার, সুলতান ও তার সঙ্গীরা। বৃহস্পতিবারের একটি তুচ্ছ ঘটনার জেরে শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার নৌবাড়িয়া ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় গুরুতর আহত দুজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও দুজন পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পাবনায় চিকিৎসা নেওয়া একজনের মাথায় চারটি সেলাই ও অপরজনের পা ভেঙে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের ময়দানদীঘি এলাকায় লতিফ সরকার নামে এক গরু ব্যবসায়ী গাড়ি পার্কিং নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তর্কে জড়ায়। পরে লতিফ বিষয়টি উপজেলা বিএনপির নেতাদের জানান। এর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব লিখন সরকার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিপক্ষ দলের রতন, হাকিম ও বেশ কয়েকজনকে ধরে এনে মারধোর করে তুলে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাদের বাধা দিলে তারা ফিরে আসেন। ঘটনায় লতিফ সরকার চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বিষয়টি সুরাহার জন্য অভিযুক্তদের থানায় ডাকেন। পরে শনিবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তরা থানাপুলিশের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসার সময় উপজেলার নৌবাড়িয়া ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে ছাত্রদল নেতা লিখন সরকার কৃষক দল নেতা সুলতানের নেতৃত্বে ১০/১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করেন। এতে খানমরিচ ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, খানমরিচ ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব হেলাল, মন্ডুতোষ ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ আরও কয়েকজন মারাত্মক আহত হন। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। আহত হেলাল ও রফিকুলের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পাবনায় সদরে পাঠানো হয়। ঘটনায় উপজেলায় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ পরিবেশ স্বাভাবিক করতে কাজ করছে।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব লিখন সরকার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে বলেন, আমি মারামারির শেষে সেখানে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করি। আমার সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে আহতরা কোনো অভিযোগ দেয় নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান শাহীন বলেন, এ ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। যে কোনো মূল্যে পরিস্থিতি শান্ত করা হবে। দলের ভেতরে আর কোনো বিশৃঙ্খলা হতে দেওয়া হবে না।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার বিষয়ে থানা অবগত রয়েছে। তবে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। হাসপাতালে আহতের খোঁজ নেওয়া হয়েছে। আর যাতে কোনো ঘটনা সংঘটিত না হয় পুলিশ সতর্কাবস্থায় আছে।