অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল। জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে স্থাপিত লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংকের পাশে অবৈধভাবে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। যেসব দোকানে বিড়ি সিগারেট বিক্রি করা হচ্ছে। অক্সিজেন ট্যাংকের পাশে আগুনের ব্যবহার বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। এ কারণে অতিদ্রুত এসব দোকান উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
যশোরে ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে একদিনে সর্বোচ্চ ৯২, আর এক ঘণ্টায় সর্Ÿোচ্চ ৫২ জন রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে। নির্ধারিত জায়গায় ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংকুলান না হওয়ায় নতুন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। ডায়রিয়ার কারণ হিসেবে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার কথা বারবার বলা হলেও এলাকাভেদে এর প্রকোপ কমবেশি দেখা দিচ্ছে। যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ পানির নমুনা পরীক্ষায় ডায়রিয়ার কোনো জীবানু না পাওয়ার কথা বললেও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আবু নওশাদ জানান, তিনি সরেজমিন পানির নমুনা সংগ্রহ করে দেখেছেন অনেক লাইন ড্রেনের মধ্যে দিয়ে নেওয়া হয়েছে। অসংখ্য পাইপে লিকেজ পেয়েছেন, যা তিনি মেরামত করেছেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, স্যাম্পল টেস্টের পানি হয়তো ট্যাংক থেকে নেওয়া হতে পারে সেখানে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে যখন পানের জন্য সংগ্রহ করছেন তখন লিকেজ পাইপ দিয়ে ময়লা ও জীবাণু পানিতে মিশে যেতে পারে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য পৌরসভা-স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান।
রোববার অনুষ্ঠিত জেলা মাসিক উন্নয়ন সভায় তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক।
সভায় পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বিভিন্ন রঙের বিন স্থাপন করা হয়েছে। রঙ অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার বিনে মেডিকেল বর্জ্য ফেলার কথা। প্রিজম নামের একটি সংগঠন এইি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রিসাইক্লিংয়ের দায়িত্ব পালন করে। প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে আলাদা আলাদা বিন স্থাপন করা হলেও বেশিরভাগ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে একটি বিনে। এতে হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। বিষয়টি তদারকির জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সভায় জানানো হয়, এ সময় ফায়ায় সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং কলকারখানা পরিদর্শন প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে হাসপাতালে অগ্নি প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, যশোরে ডেঙ্গুর শঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যশোর ও নওয়াপাড়া পৌরসভা। এখন থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। এ জন্য তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় জানানো হয় বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি সাড়ম্বরে উদযাপন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে থাকবে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিশেষ মোনাজাত ও বিশেষ প্রার্থনা।
সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, যশোরের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো। তবে, তা নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার অবকাশ নেই। জনগণের জন্য সরকারি অফিসসমূহে সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে নাগরিকরা সহজেই সেবা পেতে পারেন।
সভায় আলোচনা করেন কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম মোড়ল, যশোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোকসিমুল বারী অপু, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুদ উল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ, সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক এসএম মঞ্জুরুল হক, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
Leave a comment