মোংলা বন্দরে অবস্থানরত বাণিজ্যিক জাহাজে লুট করার প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ নতুন করে গড়ে ওঠা সুমন বাহিনীর ৫ সক্রিয় দস্যুকে আটক করেছে মোংলা কোস্ট গার্ড। শুক্রবার রাতে বন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে ট্রলারসহ তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও মামলা দায়ের শেষে তাদের মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গোয়েন্দা তথ্যের সূত্র ধরে জানতে পারি, কুখ্যাত সুমন বাহিনীর একটি দল বন্দরের পণ্য বোঝাই বাণিজ্যিক জাহাজে লুট করার উদ্দেশ্যে মোংলা থেকে ট্রলার নিয়ে হারবারিয়ার দিকে যাচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ২১ মার্চ রাতে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের একটি দল মোংলার ভদ্রা ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় একটি সন্দেহজনক ইঞ্জিন চালিত ট্রলারকে থামাতে বললে সেটি দ্রুত চালিয়ে বনের গহীনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া করে ট্রলারটি আটক করা হয়।
ট্রলারে তল্লাশি করে ১২টি দেশীয় অস্ত্র, বেশ কয়েকটি ইয়াবা, ২৫ গ্রাম গাঁজা সহ কুখ্যাত সুমন বাহিনীর ৫ দস্যুকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো মো. জনি (১৯), মো. আলিরাজ (২৫), স্বপন মুন্সী (৪০), মো. আজিম (২৬) ও মো. মেজবাহ (১৯)। তাদের সবাই মোংলা ও খুলনার কয়রা থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে পূর্বেও মোংলা ও কয়রা থানায় একাধিক চুরি, মাদক ও মারামারির মামলা রয়েছে এবং তারা সকলেই ওই মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি।
জব্দকৃত আলামতসহ আটককৃতদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ২৪ ঘণ্টা তাদের টহল জারি রেখেছে। এর মাধ্যমে কোস্ট গার্ডের আওতাধীন উপকূলীয় ও নদী তীরবর্তী অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত রাখা সম্ভব হয়েছে। কোস্ট গার্ডের এমন অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আনিসুর রহমান বলেন, কোস্ট গার্ড সুমন বাহিনীর ৫ সদস্যকে আটক করে মোংলা থানায় হস্তান্তর করেছে, কিন্তু কে এই সুমন, তার নাম পরিচয়সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গোপন অনুসন্ধান চলছে। এই সুমন নামে এর আগেও বহু অভিযোগ প্রশাসনের কাছে রয়েছে। যতটুকু জানা গেছে, এই সুমন বন্দরের শুধু বাণিজ্যিক জাহাজ নয়, সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী, মাছ, কাঁকড়া ও বনের মূল্যবান বনজ সম্পদ পাচারের সাথেও জড়িত রয়েছে। তদন্ত চলছে, শীঘ্রই তাকে গ্রেফতার করে তার সকল তথ্য-উপাত্তসহ জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।