প্রায় তিন দশক ধরে মহাবিশ্বের অসংখ্য রহস্যজনক বিষয় পর্যবেক্ষণ করেছে হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপ। মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা এবং ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এর যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছিল হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপের অভিযান। সম্প্রতি এই স্পেস টেলিস্কোপ মহাকাশে তিনটি ছায়াপথের সংযোগস্থল খুঁজে পেয়েছে।
জানা গেছে, পৃথিবী থেকে এর অবস্থান ৬৮১ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। ক্যান্সার নক্ষত্রপুঞ্জে রয়েছে এর অবস্থান। ইনস্টাগ্রামে ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির তরফ থেকে এই ছবি শেয়ার করা হয়েছে। এই তিনটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের সংযোগকে বলা হচ্ছে গ্যালাকটিক ট্রায়ো। এদের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে উক্ত ছবিতে নক্ষত্র গঠনের অশান্ত পর্যায় এবং জোয়ারের বিকৃতি দেখা গেছে। ছবির একদম কেন্দ্রস্থলে রয়েছে ধুলার একটি পুরু আস্তরণ। তবে এই তিন ছায়াপথের সংযোগস্থলের বাইরের অংশ দিয়ে পিছনের একটি ছায়াপথ থেকে আসা আলোও বিচ্ছুরিত হচ্ছে।
মহাকাশে অন্যান্য ছায়াপথেরও যে অস্তিত্ব রয়েছে এই প্রসঙ্গে প্রথম সন্ধান দিয়েছিল হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপ। মাঝে মাঝে বিভিন্ন ছায়াপথে অদ্ভুত সব রূপ ধরা পড়ে এই টেলিস্কোপে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ ঘন ধুলা এবং সর্পিল আকারে থাকা উজ্জ্বল নক্ষত্রদের সমাবেশে সৃষ্ট যে ছায়াপথের ছবি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে সেটি আসলে দূরের গ্যালাক্সি মার্জার আইসি ২৪৩১।
নাসার হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণের একটি সিরিজ রয়েছে যার নাম ‘weird and wonderful galaxies’। এরই অন্তর্গত নতুন এই তিনটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের সংযোগস্থল। ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির মতে, এই সিরিজের উদ্ভাবন করেছিল Galaxy Zoo citizen science initiative। ১৮৯৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্টিফেন জাভেল্লে গ্যালাক্সি মার্জার আইসি ২৪৩১ আবিষ্কার করেন।
জানা গিয়েছে, ওই গ্যালাক্সি জু প্রোজেক্টে মূলত সাধারণ মানুষ (যারা মহাবিশ্বের ব্যাপারে আগ্রহী) এবং অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের যুক্ত করা হয়। আর তাদের সাহায্যেই লক্ষ লক্ষ ছায়াপথের শ্রেণীবিন্যাস করা হয়। যারা অংশগ্রহণ করেন তারা সরাসরি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অবদান রাখতে পারেন। আর সেই সঙ্গে মহাবিশ্ব তৈরি করে এমন সুন্দর বৈচিত্র্যময় ছায়াপথ দেখার সুযোগ পান।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এটাই প্রথম নয়। এর আগেও মহাকাশের অসাধারণ সব ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার হাব্বল স্পেস টেলিস্কোপ। ৩০ বছর ধরে মহাকাশে নজর রেখেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। ১৯৯০ সালে প্রথম এটি লঞ্চ করা হয়েছিল। তারপর থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি পর্যবেক্ষণ করেছে এই স্পেস টেলিস্কোপ। মহাকাশের বিস্তীর্ণ অংশ ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য নাসার মূল হাতিয়ার হল এই স্পেস টেলিস্কোপ।
সূত্র- স্পেসডটকম , বিজিআরডটকম।
পিএসএন/এমঅাই