দিনের শুরুতে এমন খাবার খাওয়া উচিত যা মস্তিষ্ক রাখবে তরতাজা।
কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, উন্নতমানের পুষ্টিকর সকালের নাস্তা সারাদিনের কর্মক্ষমতা এমনকি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
‘নিউট্রিয়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত ২০২১ সালের এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, যেসকল কিশোর কিশোরী সকালে পুষ্টিকর নাস্তা খায় তাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অন্যান্যদের চেয়ে ভালো।
২০১৬ সালে ‘নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড মেডিকেল’য়ে প্রকাশিত ছোট এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রাপ্ত বয়স্করা উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবারের পরিবর্তে সকালে পুষ্টিকর নাস্তা খেলে মস্তিষ্ক বেশি সচল থাকে।
আর ২০২১ সালে ‘সাইকোফিজিওলজি’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সকালে নাস্তা না করা সাময়িক স্মৃতিভ্রংশ ও মনোযোগের ঘাটতি ঘটাতে পারে।
দ্যা মাইন্ড ডায়েটের লেখক, যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ম্যাগি মুন বলেন, “উন্নত মস্তিষ্ক ও জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়াতে কেবল সকালের নাস্তাই নয় বরং সারা সপ্তাহে যা খাওয়া ও পান করা হয় তার সব কিছুর ওপর নির্ভর করে।”
মস্তিষ্কের জন্য উপকারী এমন কয়েকটা সকালের খাবার সম্পর্কে জানানো হল।
ডিম: মস্তিষ্কের সুস্থতায় ডিম উপকারী।
“ডিম রান্না করা সহজ, এতে আছে কোলিন ও লুটেইন। এই দুই উপাদানই শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে এবং মধ্য বয়সে জ্ঞানীয় ক্ষমতার ক্ষয়রোধে উপকারী” জানান মুন।
আর এই তথ্য ২০১৮ সালে ‘অ্যামেরিকান কলেজ অব নিউট্রিশন’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল।
ওটমিল: নাস্তায় ওটমিল বা ওটস খাওয়ার পরামর্শ দেন অনেক পুষ্টিবিদই।
ওটস শস্য-জাতীয় খাবার হওয়ার কারণে তা মস্তিষ্কের দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে এবং পঠন ও মৌখিক সাবলিলতা বাড়ে।
মুনের মতে, “স্টিল কাট’ ওটস খাওয়া উপকারী যা প্রায় গোটা শস্যের কাছাকাছি হয়ে থাকে এবং চিবাতেও বেশ আরাম লাগে।”
হলুদ: মস্তিষ্ক ভালো রাখতে দিনের প্রথম ভাগে হলুদ খাওয়া উপকারী। এতে আছে কারকুইমিন যা স্মৃতিশক্তি ও জ্ঞানীয় দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করে। ফলে আলৎঝাইমার’স রোগের ঝুঁকি কমায়।
বেরি: সকালের নাস্তায় টক দইয়ের সঙ্গে বেরি খাওয়া বেশ মজাদার ও উপকারী।
‘অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড ক্যামিসস্ট্রি’ জার্নালে প্রকাশিত এক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, বেরিতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন যা মূলত একে রঙিন করে তা মস্তিষ্কের কোষের জারণ থেকে রক্ষা পেতে এবং অভ্যন্তরীন নিউরনগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি পায়।
রঙিন ফল ডালিমও মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কফি: কফি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। তবে অতিরিক্ত কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
গবেষোণায় দেখা গেছে, সকালে এক কাপ কালো কফি মন ভালো রাখে ও শরীরে শক্তি যোগায়।
মুনের মতে, “কফিতে থাকা ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একসঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে।
পানি: পানি শরীরকে আর্দ্র রাখতে সহায়তা করে।
মুন বলেন, “মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।”
মস্তিষ্কের ৭৫ শতাংশ পানি দিয়ে তৈরি অর্থাৎ সামান্য পানির ঘাটতি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমানোর পাশাপাশি মন-মেজাজের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।