স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখার জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করতে যাচ্ছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব নীতি নির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়নের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিসিএস হেলথ ক্যাডার আয়োজিত ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য ক্যাডার বিলুপ্তি সংক্রান্ত সুপারিশ প্রত্যাখান ও উপসচিব পদে সব ধরনের কোটা’ বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন চিকিৎসকেরা।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক সদস্য সচিব উম্মে তানিয়ে নাসরিন বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে, ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন এ ধরনের একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।
গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী জানিয়েছেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার বাদ দেওয়ার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এর পরিবর্তে জুডিশিয়ারি সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্যের পৃথক কমিশন তৈরি করা হতে পারে।
ডা. তানিয়া বলেন, স্বাস্থ্য ক্যাডারের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও জনগণের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ডা. মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সম্ভাব্য সুপারিশের প্রতিবাদে ২৫টি ক্যাডার মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা সব অফিসে কর্মবিরতি পালন করবো, শুধু জরুরি বিভাগের ডাক্তারেরা এর বাইরে থাকবে। আগামী বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সব অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। এ ছাড়া আগামী ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ আয়োজন করা হবে। সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব পর্যায়ের নীতি নির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়িত করা এবং উপসচিব পুলে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করার দাবি তুলেছে।
স্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না করে জুডিশিয়ারি সার্ভিস কমিশনের মতো পৃথক কমিশন করা হলে কি সমস্যা হবে জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা বলেন, আলাদা কমিশন করা হলে আর্থিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতিমালা কীভাবে হবে, কমিশন স্বাধীনভাবে কীভাবে চলবে সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। প্রশাসন সংস্কার কমিশন শুধু জনপ্রশাসন সংস্কার করুক। স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন স্বাস্থ্যের সংস্কার করুক। যদি স্বাস্থ্যে ক্যাডার সার্ভিস বাদ দিতে হয় তাহলে দেশে কোনও ক্যাডার সার্ভিস থাকবে না।