দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ১২ দলীয় জোট ও সমমনা জোটের শীর্ষ নেতাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানিয়েছে বিএনপি। এসব দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়। বৈঠকে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বানের পাশাপাশি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে বলে বার্তা দিয়েছে দলটি।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে গুলশান চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রথমে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যার পরে সমমনা জোটের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি জোট নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান এবং সেলিমা রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ। প্রথমে ১২ দলীয় জোট ও পরে সমমনা জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন বর্জন করে রাজপথে আন্দোলনে থাকা সমমনা বাকি দলগুলোর সঙ্গেও ধারাবাহিকভাবে বৈঠক করবে বিএনপি।
বৈঠক সূত্র জানায়, ভার্চুয়াল বৈঠকের শুরুতেই রাজপথে অব্যাহত আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখায় ও সরকারের শত প্রলোভনে একতরফা নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় জোট নেতাদের ধন্যবাদ জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
এসময় ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য জোট নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
জানা গেছে, বৈঠকের এক পর্যায়ে সমমনা জোটের এক শীর্ষ নেতা নির্বাচন বর্জন করা সব দলগুলোকে এক মঞ্চে নিয়ে আন্দোলন করার প্রস্তাব দেন। একইসঙ্গে আন্দোলন পরিচালনার জন্য লিয়াজোঁ কমিটি করার পরামর্শ দেন।
পরে বিএনপির হাইকমান্ড থেকে শরিক দলের নেতাদের আশ্বস্ত করা হয়, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোকে নিয়ে সমন্বয় করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা হবে।
বৈঠকে উপস্থিত জাগপার সিনিয়র সহ সভাপতি রাশেদ প্রধান বলেন, ১ ঘণ্টার মতো আমাদের বৈঠক হয়েছে। শরিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদারের তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের পক্ষে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সহসভাপতি ও ১২ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক রাশেদ প্রধান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য নওয়াব আলী খান আব্বাস, বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি রশিদ বিন ওয়াক্কাস, জাগপার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রমুখ।
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে সোয়া ৭টা পর্যন্ত সমমনা জোটের ১০টি দলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এসসয় উপস্থিত ছিলেন— সমমনা জোটের পক্ষে জোটের আহ্বায়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বিকল্পধারার নুরুল আমীন বেপারী, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী, জাগপা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, এনডিপি মহাসচিব কারী মো. আবু তাহের প্রমুখ।