ফুটবলে এমন উদযাপন খুব কমই দেখা যায়। গোলের পর গোলরক্ষককে কেন্দ্র করে উদযাপন করছেন খেলোয়াড়েরা। সাধারণত ফুটবলে দেখা যায় গোলদাতাকে কেন্দ্র করেই উল্লাসে মাতেন অন্য সব খেলোয়াড়েরা। আর গোলরক্ষক উদযাপন করেন নিজের সঙ্গে নিজেই।
তবে আজ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ম্যাচে তেমনটা হয়নি। রিয়ালের তৃতীয় গোলের নায়ক ভিনিসিয়ুস জুনিয়র হলেও উদযাপনের কেন্দ্রে থাকেন আন্দ্রে লুনিন। রিয়াল গোলরক্ষক আজ এমন এক অ্যাসিস্ট করেছেন তাতে তাকে কেন্দ্র না করে উদযাপন করলে সার্থকতাই পেতো না গোলটি। তা ভালো করেই বুঝতে পেরে লুনিনের কোলে উঠে যান জুড বেলিংহাম।পরে একে একে ফেদেরিকো ভালভার্দে-অ্যান্তোনিও রুডিগার এসে উদযাপনে যোগ দেন। এ সময় প্রতিপক্ষের বাঁ দিকের কর্নারে গোলরক্ষকদের মতো একা একা আনন্দ করেন ভিনিসিয়ুস।
ম্যাচের ৬১ মিনিটে প্রতিপক্ষের নেওয়া কর্নার শটের বল তালুবন্দি করেই সময়ক্ষেপন না করে লম্বা শট নেন লুনিন। ওশাসুনার খেলোয়াড়রা রিয়ালের বক্সে জড়ো হওয়ায় উপরে থাকা ভিনিসিয়ুস প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে গতিতে পরাস্ত করে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন।
প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক সামনে এসে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে তাকে বোকা বানিয়ে ফাঁকা পোস্টে বল জড়াতে ভুল করেননি ব্রাজিলিয়ান তারকা।তাই গোলের নায়ক ভিনি হলেও মূল কারিগর লুনিনকে নিয়েই আনন্দে মাতোয়ারা হন রিয়ালের খেলোয়াড়রা। এই গোলটি মনে করে দিয়েছে প্রিমিয়ার লিগে অ্যালিসন বেকার-মোহাম্মদ সালাহর গোলকে। ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষকের পাস ধরে এমন এক গোল করেছিলেন লিভারপুল স্ট্রাইকার সালাহ।
ঘরের মাঠে আজ জয়টা প্রয়োজন ছিল রিয়াল মাদ্রিদের।না হলে বার্নাব্যুতে হ্যাটট্রিক হার দেখতে হতো লস ব্ল্যাঙ্কোসদের। তা অবশ্য হতে দেননি ভিনিসিয়ুস। হ্যাটট্রিক করে রিয়ালকে ৪-০ ব্যবধানের জয় এনে দিয়েছেন তিনি। সর্বশেষ দুই ম্যাচে বার্সেলোনা এবং এসি মিলানের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছিল রিয়াল।ওশাসুনার উপর সব পজিশনে আধিপত্য দেখানো রিয়ালকে অবশ্য গোল পেতে ৩৪ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। বেলিংহামের পাস ধরে বাঁ প্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে জোরালো শটে গোল করেন ভিনি। তার গোলের পর এ মৌসুমে প্রথম গোল করেন বেলিংহাম। ৪২ মিনিটে রাউল অ্যাসেনসিওর লম্বা এক পাসে ওশাসুনার গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার।
ভিনি-বেলিংহামের গোলে বিরতিতে যায় রিয়াল। দ্বিতীয়ার্ধে ওশাসুনা গোল শোধের বিপরীতে আর দুই গোল হজম করে। যার তৃতীয়টি লুনিনের অবিশ্বাস্য পাস থেকে আসে। আর ভিনির হ্যাটট্রিক গোলটি আসে অনেকটা প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের ভুলে। সতীর্থর পাস ঠিক মতো রিসিভ করতে না পারলে বলের নিয়ন্ত্রণ নেন রিয়ালের ফরোয়ার্ড ব্রাহিম দিয়াজ। গোলরক্ষক সামনে আসলে ফাঁকায় থাকা ভিনিকে দিয়ে দেন তিনি। তা থেকে জোরালো শটে বল জালে জড়ান ভিনি।