প্রতি কেজি ৫৬ টাকা ৫৯ পয়সা দরে ভারতের এসএইএল এগ্রি কমোডিটিজ থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এ চাল কিনতে ব্যয় হবে প্রায় ২৮৩ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এটিসহ আরও কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
সম্প্রতি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে পাঁচ লাখ টন চাল আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেয়। এরই আওতায় খাদ্য মজুত বাড়িয়ে সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার স্বার্থে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রতি টন ৪৭১ দশমিক ৬০ ডলার দরে ৫০ হাজার টন চাল কিনতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৮২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি চালের দাম পড়ছে ৫৬ টাকা ৫৯ পয়সা।
দেশে খাদ্যশস্যের মজুদ পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও আগামী করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক ৬ নভেম্বর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানিত খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির বৈঠকে লক্ষমাত্রার অতিরিক্ত ধান-চাল সংগ্রহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভার কার্যবিবরণী অনুযায়ী, সরকারি খাতে এই অর্থবছরে মোট ২০ লাখ ৫২ হাজার টন চালের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে সাড়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে।
২ লাখ ৩০ হাজার টন সার আমদানি: এদিকে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের চারটিসহ মোট সাতটি প্রস্তাবের বিপরীতে ২ লাখ ৩০ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৯০০ কোটি ৮৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সিঙ্গাপুর, রাশিয়া, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এবং সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান থেকে এই সার আমদানি করা হবে।
এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন: এ ছাড়া আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দুই কার্গো তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৩৬৬ কোটি ৬৪ লাখ ২৩ হাজার টাকা। দুই কার্গোই আসবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভিটল এশিয়া প্রাইভেট থেকে। এক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের (এমএমবিটিইউ) দাম পড়ছে যথাক্রমে ১৪.৪২ এবং ১৪.১৩ ডলার।
৫ কোটি ৩২ লাখ পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহের প্রস্তাব অনুমোদন: আগামী ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে ৫ কোটি ৩২ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬০টি পাঠ্যপুস্তক সংগ্রহের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যয় হবে ২৭৬ কোটি ৬৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা।