ভ্রমণপ্রেমীদের অন্যতম গন্তব্য ভারত। কেনা ভারত জুড়েই রয়েছে রহস্য ঘেরা দর্শনীয় স্থান। কিছু কিছু স্থান এতোটাই রহস্যে ঘেরা যা বারমুডা ট্রায়াঙ্গলকে হার মানাবেন। তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে-
রূপকুণ্ড, উত্তরাখণ্ড: রূপকুণ্ড উত্তরাখণ্ডের চমোলি জেলায় অবস্থিত একটি হ্রদ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৬৪৯৯ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই হ্রদ অধিকাংশ সময়েই বরফে ঢাকা থাকে। কিন্তু গ্রীষ্মে বরফ গলে গেলে, এখানে বেরিয়ে আসে শত শত নরকঙ্কাল। কারও কারও মতে এই কঙ্কালগুলির বয়স ১২০০ বছরেরও বেশি।
ম্যাগনেটিক হিল, লাদাখ: লেহ-কার্গিল-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত এই স্থানটির দূরত্ব লেহ থেকে প্রায় তিরিশ কিলোমিটার। এখানে প্রচলিত আছে, এই স্থানে নাকি মধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করে না। এখানে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা গাড়ি নিজে থেকেই গড়াতে থাকে চড়াইয়ের দিকে।
কোডিনি, কেরল: কেরলের মলপ্পুরম জেলায় অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম কোডিনি। এই গ্রামটির বিশেষত্ব এখানে প্রায় প্রত্যেক ঘরে ঘরে রয়েছে যমজ সন্তান। সরকারি হিসেব অনুসারে, এখানে যমজ শিশুর সংখ্যা ৩০০ জোড়ার কাছাকাছি। যমজ সন্তান হওয়ার ঘটনা কিন্তু বেশ বিরল। জাতীয় সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি ১০০০ জনে যমজ সন্তন থাকে প্রায় ৯টি।
লোনার হ্রদ, মহারাষ্ট্র: মুম্বই থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরে বুলধনা জেলাতে অবস্থিত এই হ্রদটি হাজার হাজার বছর আগে উল্কাপাতের ফলে তৈরি একটি বিরল প্রকৃতির হ্রদ। অদ্ভুত এই হ্রদে একই সঙ্গে দুই ধরনের অম্লত্বের জল দেখা যায়, যা পরস্পর মিশ্রিত হয় না। আশ্চর্যের বিষয় হল, এই হ্রদের মাটিতে যে ধরনের খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় তা অবিকল চাঁদের মাটিতে পাওয়া খনিজের মতো।
বীরভদ্র মন্দির, অন্ধ্র: বেঙ্গালুরু থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বীরভদ্র মন্দিরটি ষোড়শ শতকে তৈরি। এই মন্দিরে রয়েছে একটি বিশাল ঝুলন্ত থাম। এই থামটি শুধু মাত্র ছাদ থেকেই ঝুলে রয়েছে।
ADVERTISEMENT
স্পিতির মমি: মমি বলতেই প্রথমে মাথায় আসে মিশরের কথা। কিন্তু হিমাচল প্রদেশের স্পিতিতে রয়েছে লামা সঙ্ঘ তেনজিং-এর মমি। এই মমি ৫০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন। ১৯৭৫ সালে ভূমিকম্পের ফলে একটি কবর থেকে এই মমি পাওয়া যায়। চুল, দাঁত থেকে ত্বক সবই দেখতে পাওয়া যায় এই মমির। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কোনও ধরনের রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়নি এই মমি রক্ষা করতে। পাশাপাশি এই মমিটি রয়েছে ধ্যানের ভঙ্গিতে।
রামেশ্বরমের ভাসমান পাথর: তামিলনাডুর রামেশ্বরমে এক ধরনের পাথর দেখা যায় যা নাকি ভেসে থাকতে পারে জলে। এই পাথরগুলির সঙ্গে রামায়ণ সংক্রান্ত ধর্মীয় বিশ্বাস জড়িত। কেউ বলেন এই পাথরগুলি পিউমিক প্রকৃতির আগ্নেয় শিলা, কারও মতে পাথরগুলির ঘনত্ব এক এক স্থানে এক এক রকমের।
গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র ব দ্বীপের শব্দ: গঙ্গা ব্রহ্মপুত্র ব দ্বীপে মাঝেই মাঝেই শুনতে পাওয়া যায় এমন শব্দ যা কিছুটা ‘সোনিক বুমের’ মতো শুনতে। সাধারণত বিমান থেকে এই ধরনের শব্দ সৃষ্টি হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, বিমান আবিষ্কারের আগে থেকেই এই শব্দ শোনা যায় এখানে।
কুলধারা, রাজস্থান: জয়সলমের থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি গ্রাম কুলধারা। কয়েকশত বছর ধরে কেউ থাকেন না এই গ্রামে। কথিত আছে, প্রায় ৩০০ বছর আগে আচমকাই এক দিন গ্রামবাসীরা চলে যান এই গ্রাম ত্যাগ করে। তারপর থেকে যত মানুষই এখানে থাকতে গিয়েছেন, কিছু না কিছু সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
ভানগড় দুর্গ, রাজস্থান: ষোড়শ শতকে ভগবন্ত দাস নির্মিত ভানগড় দুর্গটি ভৌতিক স্থান হিসাবে পরিচিত। স্থানীয়দের দাবি প্রাচীন একটি অভিশাপের ফলে এই স্থানটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এখানকার অধিকাংশ বাড়িতে কোনও ছাদ নেই। বর্তমানে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ এই দুর্গের রক্ষণাবেক্ষণ করে। শোনা যায়, রাতে এই দুর্গে নানা রকম অলৌকিক ঘটনা ঘটে। তাই রাতে এখানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।
জাতিঙ্গা, আসাম: এমনিতে আসামের এই গ্রামটি দেখে কিছুই বোঝার উপায় নেই। কিন্তু বর্ষাকালে অদ্ভুত একটি ঘটনা ঘটে, যা বিজ্ঞানে ব্যাখ্যা করা কঠিন। এই সময় অসংখ্য পাখির মৃত্যু হয় এখানে। দলবদ্ধ ভাবে পক্ষিকূলের আত্মহত্যার কারণ ঠিক কী তা নিয়ে নিশ্চিত নন কেউই।
কৃষ্ণের ননীর গোলা: মহাবলীপুরম, চেন্নাই থেকে ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত মহাবলীপুরমে একটি ঢালু প্রস্তরতলে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি গোলাকার পাথর। স্থানীয়রা একে বলেন কৃষ্ণের ননীর গোলা। প্রস্তরটির ব্যাস প্রায় ৫ মিটার।