বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ২০১৯ সালের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। এই আদেশের ফলে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি চলতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সোমবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জরুল হক, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ।
এর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
বুয়েটের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ রাব্বি এ রিট দায়ের করেন। শিক্ষা সচিব, বুয়েটের ভিসিসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বুয়েটে প্রবেশকে ঘিরে আন্দোলন-পালটা আন্দোলন শুরু হয়। এ অবস্থায় রোববার প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে বুয়েটে প্রবেশ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। দুপুর আড়াইটার দিকে প্রায় কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে বুয়েট শহিদ মিনারে ফুল দেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। ফুল দিয়ে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে বুয়েট ত্যাগ করেন তারা। এ সময় বুয়েটের মূল ফটক এবং বিভিন্ন হলের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বুয়েট ছাত্র ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদক স্থান ত্যাগ করলেও ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীরা এরপরও বুয়েট শহীদ মিনারে ফুল দেন এবং ছবি তোলেন। তবে তারা কোনো স্লোগান দেননি।
এদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র রাজনীতিকে ফেরানোর দাবি নিয়ে বুয়েটে প্রবেশ করলেও তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা যায়নি সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
বুয়েটে জোরালোভাবে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি ওঠে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতপ্রকাশে সক্রিয় আবরারকে শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন। সহপাঠী হত্যার প্রতিবাদে টানা আন্দোলন শুরু করেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর বুয়েট কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সব ধরনের ক্রিয়াশীল ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে।