ভারতে চলমান হিজাব বিতর্কের আগুনে এবার ঘি ঢাললেন বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। গত সপ্তাহে কর্ণাটকে কলেজছাত্রী মুসকান খান একদল উগ্র হিন্দুত্ববাদী তরুণের সামনে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি তুলে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। মেয়েটির সাহসের প্রশংসা করছেন অনেকেই। কিন্তু তাদের রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে কঙ্গনা বলেছেন, কারও যদি সাহস দেখাতে হয়, তাহলে সে যেন আফগানিস্তানে বোরকা না পরে দেখায়।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন কঙ্গনা। তিনি বলেছেন, যদি সাহস দেখাতেই হয় তাহলে আফগানিস্তানে বোরকা না পরে দেখাও। নিজেকে বন্দি না করে মুক্ত করতে শেখো।
পোস্টে লেখক আনন্দ রঙ্গনাথনের এক টুইটের স্ক্রিনশটও শেয়ার করেছেন এ অভিনেত্রী, যেখানে দুটি ছবির মধ্যে তুলনা করা হয়েছে। প্রথমটিতে দাবি করা হচ্ছে, এটি ১৯৭৩ সালে ইরানের ছবি, যেখানে কয়েকজন নারী বিকিনি পরে সমুদ্র সৈকতে বসে রয়েছেন। পরের ছবিটি সাম্প্রতিক, যেখানে শুধু বোরকা পরা নারীদের ভিড়।
ভারতে হিজাবকাণ্ডের শুরু মূলত গত ডিসেম্বরে। সেসময় কিছু মুসলিম ছাত্রী হিজাব পরে উড়ুপির একটি কলেজে যাচ্ছিলেন। তার জেরে হিন্দুত্ববাদী শিক্ষার্থীরা গেরুয়া বস্ত্র পরে কলেজে যেতে শুরু করেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকায় কর্ণাটকের বিজেপিশাসিত সরকার কলেজছাত্রীদের হিজাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
ধীরে ধীরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিশেষ করে গত মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে মাণ্ড্যর প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে মুসকান খানের মুখোমুখি হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর আলোচনার ঝড় ওঠে। মামলা গড়ায় আদালতে।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শুনানি ছিল কর্ণাটক হাইকোর্টে। যতদিন এ বিষয়ে মামলা চলছে, ততদিন ধর্মীয় পোশাক পরে শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আবারও এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।