বিএনপির সাথে দ্বিতীয় দফা সংলাপ নিয়ে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর জেরে বিভিন্ন পর্যায়ের দুই শতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন।
শনিবার (১ অক্টোবর) দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠানো হয়। দলটির নিভরযোগ্য সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে বিএনপির সাথে সংলাপে, কল্যাণ পার্টির সিনিয়র নেতাদের বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত নতুন এবং জুনিয়র যারা জামায়াত ইসলামী থেকে দলে এসেছে তাদের গুরুত্ব দিয়ে বিএনপি সংলাপে প্রতিনিধিত্ব করায় দলের নেতাদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ তৈরি হয়। যা থেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত।
কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এম এন মোস্তফা নূর ‘বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি হতে গণপদত্যাগ’ শীর্ষক পদত্যাগ পত্রে লিখেছেন, আস্ সালামু আলাইকুম। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে যখন রাজনৈতিক পরিসর সংকুচিত হতে হতে আরও বেশি কর্তৃত্বপরায়ণ মানসিকতায় পর্যবসিত হয়েছে এবং পরিবারতান্ত্রিক রাজতন্ত্র যখন পরস্পর সুবিধায় উত্তীর্ণ হতে এক হয়ে কাজ করে। ভয়ঙ্কর ডাইনেস্টির রক্তাক্ত বরফ আচ্ছাদন ভেদ করে তখনি প্রজন্মের সামনে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রত্যয়ে আপনার সাথে রাজনৈতিক সংহতি ও প্রত্যয় ঘোষণা করি আমি এবং আমরা অনেকেই।
আপনার সাথে রাজনৈতিক পথ চলায় আমাদেরকে কিছু অনাকঙ্ক্ষিত অনিবার্য পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রেখে অনেক দিন পার করেছি। রাজনীতির পথ জটিল এবং জটিলতর আজ। তবুও আমাদের দেশ ও জনগণের জন্যে দায় আছে। আমাদের বিরাজনীতিকীকরণের কবল হতে বেরিয়ে আসতে হবে।
এমনি এক অনিবার্য কারণে আমি, এম. এন মোস্তফা নূর এই পদত্যাগপত্রের মাধ্যমে আজ ১ অক্টোবর ২০২২ থেকে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি থেকে পদত্যাগ ঘোষণা করছি। আপনার ভালোবাসা এবং সহযোগিতা আমাকে ঋণী করেছে। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জানাই। আপনার নিজের পার্টি এবং আপনার নিরন্তর সাফলতা কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে মোস্তফা নূরে বলেন, হ্যাঁ, আমরা পদত্যাগ করেছি। বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত দুই শতাধিক নেতাকর্মী হবে। এখানে আর কেউ থাকবে না।
কেন এত নেতাকর্মী একযোগে পদত্যাগ করল জবাবে তিনি বলেন, কল্যাণ পার্টিতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে কাজ হচ্ছে না। গণতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে না। কাজের পরিসর নেই।
পদত্যাগকারীরা নতুন কোন রাজনৈতিক দলে যোগ দেবে কিনা এমন প্রশ্ন তিনি করেন, এখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
পদত্যাগকৃত নেতাদের মধ্যে রয়েছে কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এড. এম. এন মোস্তফা নূর, কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান উবায়দুল্লাহ মামুন, কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম মহানগরের সিনিয়র নেতা মোক্তাদের মাওলা চৌধুরী লিটন, ঢাকা মহানগর সিরিয়র নেতা তাফহিমুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর নেতা- বিশিষ্ট লেখক, সাংবাদিক আব্দুল্লাহ মজুমদার প্রমুখ।