সিলেটে গরু চুরি অভিযোগে গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তবে পিটুনির সময় বালু ও চুন মিশিয়ে তাকে খাওয়ানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার মধ্য জাফলং ইউনিয়নের জাফলং চা বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
আজ বুধবার সকালে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান হেলাল নামে ওই যুবক। নিহত হেলাল ডৌবাড়ী ইউনিয়নের দাতারি গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মধ্যজাফলং চা বাগানে গরু চুরির অভিযোগে ইসলামপুর গাংপার গ্রামের মোশাররফ হোসেন, আমির উদ্দিন, সালাম ও তাদের সহযোগীরা হেলালকে ধরে নিয়ে যান। পরে তাকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে চুনা ও বালু মিশ্রিত প্রায় এক লিটার পানি পান করানো হয়। একপর্যায় হেলাল জ্ঞান হারালে তাকে মধ্যজাফলং ইউনিয়ন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর সেখানে রেখে হেলালকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে বুধবার ভোরে হেলালের স্বজনরা মধ্যজাফলং ইউনিয়ন অফিস থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বমি করতে থাকেন হেলাল। এরপর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নিহতের পরিবারের লোকজন। তাদের অভিযোগ, পুলিশের অবহেলার কারণেই হেলালের মৃত্যু হয়েছে। এমনকি পুলিশ সময়মতো হেলালকে উদ্ধার করলে তার মৃত্যু হত না।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার এসআই প্রভাকর বড়ুয়া জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খবর পেয়ে হেলালকে উদ্ধার করতে যান তারা। স্থানীয় লোকজন তাকে বাড়িতে দিয়ে আসবেন বলে পুলিশকে আশ্বস্ত করলে তারা চলে আসেন। এছাড়া পরিবারের পক্ষ থেকেও ওই সময় তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমেদ বলেন, অতিরিক্ত মারধর এবং চুনা-বালুমিশ্রিত পানি খাওয়ানোর কারণে হেলালের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।