বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে ঢুকতেই দেখা পিটার বাটলারের। বাংলায় সালাম দিয়ে করমর্দন করে সোজা চলে যান ফেডারেশনের টেকনিক্যাল রুমে। মুখে হাসি ও চোখের ভাষায় বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশের ফুটবলে কতটা সুখী আছেন এ ইংলিশম্যান। তাঁর কোচিংয়ে মেয়েরা জিতেছেন সিনিয়র সাফের শিরোপা। পুরো দেশকে আনন্দে ভাসানো সেই মেয়েদের কেউ কেউ এই বাটলারকে নিয়ে মিডিয়ায় নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। ফেডারেশন চাইলেও বাটলারকে কোচ হিসেবে চান না মেয়েরা।
গত কয়েক দিন এমন সংবাদে ফুটবলাঙ্গনে শোরগোল হলেও বাফুফে নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ মেয়েদের ফুটবলের জন্য ইংলিশ এ কোচকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘ডিসেম্বরে বাটলারের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সেটা বাড়ানো হচ্ছে। ফেব্রুয়ারিতে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে বাংলাদেশের ডাগআউটে দাঁড়াবেন তিনি। আমার চাওয়া তাঁকে দীর্ঘমেয়াদি রাখা। আলোচনা করে বাকিটা জানা যাবে’– গতকাল বলেন কিরণ।
আগামী বছরের ১১-১৯ ফেব্রুয়ারি হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ। ২৯ নভেম্বর বাটলারের অধীনে সাফের প্রস্তুতি শুরু করবেন মেয়েরা। পিটারের অধীনে আট ম্যাচের পাঁচটিতে জিতেছেন সাবিনারা। একটি ড্র এবং দুটিতে হেরেছেন। নতুন ফুটবলার তুলে আনার জন্য তরুণদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন বাটলার। যেটা ভালোভাবে নেননি জাতীয় দলের সিনিয়ররা। নারী দলের সিনিয়রদের আচরণে ক্ষুব্ধ কিরণ। তাই অনূর্ধ্ব-২০ দলকে নিয়ে প্ল্যান ‘বি’ সাজিয়ে রেখেছেন তিনি।
এই দল নিয়েই আগামীতে সিনিয়র সাফে হ্যাটট্রিক শিরোপার মিশনে নামার স্বপ্ন বাফুফে এই সদস্যের। ছুটিতে যাওয়ার আগে মেয়েদের উদ্দেশে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন মাহফুজা আক্তার কিরণ, ‘আমি তাদের বলেছি, তোমাদের কাজ হলো খেলা। বেতন-ভাতা, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেখার দায়িত্ব বাফুফের। কাকে কোচ করব, না করব সেটা আমাদের এখতিয়ার। এটা নিয়ে তোমাদের চিন্তা করতে হবে না।’
বাফুফের সঙ্গে মেয়েদের চুক্তি শেষ। ছুটি থেকে মেয়েরা ফিরলে সাবিনাদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করার কথা আছে। চুক্তি না থাকলেও মেয়েদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছে ফেডারেশন। নেপালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের মতো আচরণ করলেও দলের সাফল্যের কারণে শাস্তি দেয়নি বাফুফে। তবে ভবিষ্যতে ছাড় না দেওয়ার ইঙ্গিত কিরণের।
বাফুফে নারী উইংয়ের পুরো মনোযোগ অনূর্ধ্ব-২০ সাফ নিয়ে। ভেন্যু হিসেবে প্রথম পছন্দ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। তবে এই সময়ে আগে স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট বসানোর সম্ভাবনা কম। তাই বিকল্প ভেন্যু হিসেবে আর্মি স্টেডিয়াম ও কক্সবাজার স্টেডিয়ামকে বিবেচনায় রেখেছেন কিরণ। ইতোমধ্যে কক্সবাজার ভেন্যু নিয়ে সাফের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি।
নারী দলকে নিয়ে আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা আছে ফেডারেশনের। বাফুফের চার তলায় আবাসন সংকট হওয়ায় বয়সভিত্তিক মেয়েদের জন্য ভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পের ব্যবস্থা করার চিন্তা তাদের। সেই হিসেবে যশোরের শামসুল হুদা একাডেমিতে অনূর্ধ্ব-১২ মেয়েদের রাখতে ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের অন্যতম সহসভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদীর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে কিরণের।