বাংলাদেশের মোট ১৪৮টি অ্যাকাউন্ট ও পেজ ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে একথা জানায় মেটা।
মেটার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য আচরণের জন্য ফেসবুক থেকে ৫০টি অ্যাকাউন্ট ও ৯৮টি পেজ সরিয়ে ফেলে হয়েছে। এই নেটওয়ার্কটি বাংলাদেশেরই এবং তারা বাংলাদেশের স্থানীয় অডিয়েন্সকে টার্গেট করেছিল।
এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজের মোট প্রায় ৩৪ লাখ ফলোয়ার ছিল। একই সঙ্গে এসব পেজ থেকে প্রায় ৬০ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করা হয়েছে।
ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে এ ধরনের তৎপরতার পেছনে যারা আছে, তাদের কয়েকজনকে অনুসন্ধানের আগেই অটোমেটেড সিস্টেমেই চিহ্নিত করে অকার্যকর করা হয়েছে। তারা এ ধরনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কনটেন্ট পোস্ট করতো বা পেজগুলো চালাতো।
এর মধ্যে কিছু পেজ কাল্পনিক নতুন পরিচয় নিয়ে এবং অন্যগুলো বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোর নাম ব্যবহার করতো। আবার কিছু পেজ বিএনপির নাম ব্যবহার করত এবং বিএনপিবিরোধী কনটেন্ট পোস্ট করতো। এই নেটওয়ার্ক প্রাথমিকভাবে বাংলাতেই কনটেন্ট পোস্ট করতো। তবে নিউজ ও বাংলাদেশের চলতি ঘটনাবলি ইংরেজিতেও প্রকাশ করা হতো।
এসব ঘটনাবলির মধ্যে ছিল নির্বাচন, বিএনপির সমালোচনা, বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং নির্বাচন পূর্ব সহিংসতায় দলটির ভূমিকা, বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে দলটির ভূমিকা।
প্রতিবেদনে মেটা থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফল হিসেবে এসব সন্দেহজনক ও অনির্ভরযোগ্য অতিরিক্ত তৎপরতা দেখতে পেয়েছি, যা গত বছর আমরা সরিয়ে দিয়েছি। আমরা সমন্বিত অনির্ভরযোগ্য আচরণের একটি নেটওয়ার্ক উন্মোচন করতে পেরেছি, যা এই রিপোর্টে বলা হয়েছে,’
মেটা আরও জানায়, ‘যদিও এগুলোর পেছনে থাকা ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় ও নিজেদের মধ্যকার সমন্বয়ের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমাদের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে যে, যারা এগুলোর সঙ্গে জড়িত তাদের সাথে আওয়ামী লীগ ও অলাভজনক সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) যোগসূত্র রয়েছে।’
মেটার রিপোর্টে যেসব বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও সিআরআইয়ের কথা বলা হয়েছে তার তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট ও একপেশে রিপোর্ট। যাদের মাধ্যমে ফেসবুক তদন্ত করেছে বা তথ্য সংগ্রহ করেছে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে তদন্ত করা উচিত। এটি ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আশা করিনি।’
‘বিদেশে বসে যেসব অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয় কিংবা প্রধানমন্ত্রীসহ সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতাদের চরিত্র হনন করা হয় রিপোর্টে তো তাদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। বাঁশের কেল্লাকে কী করলো, সেটা তো ফেসবুক বললো না।