বাংলাদেশকে ১৫৭ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। একইসঙ্গে নেদারল্যান্ডস সরকার দেশের নদী ব্যবস্থাপনায় ১৭.৮৯ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা। নেদারল্যান্ডসের এ ঋণ এডিবির মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিজ ফাতিমা ইয়াসমিন এবং এডিবির পক্ষে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং নিজ নিজ সংস্থার পক্ষে ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এডিবি জানায়, এ অর্থ দেশের বন্যাকবলিত এলাকার নদী ভাঙনের ঝুঁকি প্রশমিত করার পাশাপাশি নদী তীরের কাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা সমাধান করতে সহায়ক হবে। এডিবির অর্থে যমুনা, পদ্মা এবং গঙ্গা নদীর তীর রক্ষার কাজ করা হবে।
এডিবি জানায়, বন্যা ও নদী তীরের ভাঙনের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগ কর্মসূচি (এফইআরএমআইপি) ২০১৪ সালে অনুমোদিত। এ কর্মসূচির দ্বিতীয় অংশের জন্য ঋণ দিচ্ছে এডিবি। নেদারল্যান্ডসও অনুমোদিত দ্বিতীয় এ কর্মসূচির আওতায় ঋণ দিচ্ছে।
এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেন, এ কর্মসূচিটি দারিদ্র্য হ্রাস, জীবনযাত্রার উন্নতি এবং বন্যা-জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলার সাথে সাথে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা সমাধান ও সবুজায়নে সহায়ক হবে।
তিনি বলেন, এই প্রোগ্রামটি সামগ্রিক পরিকল্পনা কৌশলগুলোর উন্নয়ন এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে মধ্য বাংলাদেশে নদী ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য সরকারের রোড ম্যাপকে সমর্থন করে। নদী ভাঙনের ফলে সৃষ্ট ভূমি ক্ষয় হ্রাস, বন্যার ঝুঁকি হ্রাস, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পুনরুদ্ধারকৃত চরের জমির উন্নয়নের মাধ্যমে এটি সরাসরি জীবন ও জীবিকাকে উপকৃত করবে।
এ কর্মসূচির প্রশংসা করে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন বলেন, ব-দ্বীপের কার্যকর ডিজাইন এবং নদী ব্যবস্থায় স্থায়িত্ব বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসসহ আন্তর্জাতিক নদী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিনিময় গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে যারা নদীর ওপর নির্ভরশীল তাদের সহযোগিতায় এফআরইআরএমআইপি ট্রেস-১ এর অধীনে একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
এডিবি জানায়, এ কর্মসূচির লক্ষ্য হলো ১৫ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিকে প্লাবন থেকে রক্ষা করা এবং ৫০ লাখ জনসাধারণকে প্লাবনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা। সেই সঙ্গে উন্নয়নের জন্য ৮ হাজার হেক্টর চরের জমি নদী থেকে পুনরুদ্ধার করা হবে।