বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবন ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার দুই আসামিকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজনকে ঢাকার মোহাম্মদপুর এবং আরেকজনকে বরিশাল মহানগর এলাকা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেছে পরিবার।
তারা হলেন- বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাইয়েদ আহমেদ মান্না এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর যুবলীগ নেতা মমিন উদ্দিন কালু।
এদের মধ্যে কাউন্সিলর সাইয়েদ আহমেদ মান্না হামলার ঘটনায় করা মামলার দুই নম্বর আসামি এবং যুবলীগ নেতা মমিন উদ্দিন কালু ৪৬ নম্বর আসামি।
কাউন্সিলর মান্নার বড় ভাই শেখ মাসুদ আহমেদ রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার ভাই মান্না শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ এলাকায় বোনের বাড়িতে ছিলেন। সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে সাদা পোশাকধারীরা তাকে তুলে নিয়ে গেছে। বাধা দিতে গেলে নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দেয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মান্নাকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানায়। পরে পুলিশ তাকে আটকের কথা অস্বীকার করেছে।’
অন্যদিকে মমিন উদ্দিন কালুর শ্যালক আরিফুর রহমান অভিযোগ করেন, শুক্রবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যার পর বরিশাল নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে মমিন উদ্দিন কালুর বাসায় একটি গাড়িতে কয়েকজন লোক যান। তারা নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে কালুকে তুলে নিয়ে যান।
বরিশাল কোতোয়ালি থানা এবং ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ দুজনকে ‘নিয়ে যাওয়া’র বিষয়ে ‘কিছু জানে না’ বলে জানিয়েছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউএনওর সরকারি বাসভবন ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলার দুই নম্বর আসামি শেখ সাইয়েদ আহমেদ মান্না। একই মামলার ৪৬ নম্বর আসামি মমিন উদ্দিন কালু।’
তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রেফতার করেছেন কি-না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি এখনো কিছু জানি না।’
ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল লতিফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে সাইয়েদ আহমেদ মান্না নামের এক ব্যক্তির খোঁজে তার আত্মীয় পরিচয়ে একজন এসেছিলেন। তবে তাকে তুলে নেওয়ার ব্যাপারে থানা পুলিশ কিছু জানে না।’
গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসায় কয়েক দফা হামলা চালানো হয়। হামলাকারীদের রুখতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনসার সদস্যদের রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়তে হয়। প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাত থেকে বরিশালে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ অচল করে দেয়া হয়।
হামলার ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়। দুটিতেই বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মীকেও আসামি করা হয়েছে।