দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে ঊর্ধ্বহারে। বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন উদ্বেগের মধ্যে বাংলাদেশেও নতুন রোগী শনাক্ত ও সংক্রমণের হার প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে বাড়ছে। উদ্বেগজনকহারে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যবিধি মানায় অবহেলাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। শারীরিক দূরত্ব কিংবা জন সমাবেশ এড়িয়ে চলতে না পারলেও অনেকেই সচেতনভাবে মাস্কটা পরছেন। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাস্কের ধরন বদলানোরও সময় এসেছে বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্যবিদরা।
গত ২৪ ঘণ্টায় (৬ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত) নতুন করে করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আর শনাক্তের হার প্রায় পাঁচ শতাংশের কাছাকাছি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৪০ জনের। যা তার আগের ২৪ ঘণ্টায় ছিল ৮৯২ জন। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় এক লাফে ২৪৮ জন রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছেন। দেশে এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর একদিনে এক হাজার ১৭৮ জন করোনা শনাক্ত হয়েছিলেন। এর মাঝে আর একদিনে এত বেশি সংখ্যায় কোভিড আক্রান্ত হয়নি।
সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতিতে দেশে অতিসংক্রমণশীল ওমিক্রনের প্রভাব রয়েছে ভাবলেও সরকারের রোগ নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, এখনও দেশে ওমিক্রন নয়, বরং ডেল্টার প্রভাব চলছে। সেইসঙ্গে রয়েছে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে চরম উদাসীনতা।
এমন পরিস্থিতিতে কাপড়ের মাস্ক না পরতেই উৎসাহিত করছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, হয়তো এই মাস্ক ভাইরাসের বিরুদ্ধে যথাযথ সুরক্ষা দিতে পারছে না। কাপড়ের মাস্কের বদলে তারা সার্জিক্যাল মডেলের বা আরও শক্তিশালী শ্বাসযন্ত্রের মাস্ক ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন। তারা বলছেন, এক স্তরের কাপড়ের মাস্ক অনেক মানুষের কাছে আরামদায়ক এবং স্টাইলের জন্য উপযুক্ত। ভাইরাসের বড় ড্রপলেট আটকাতে পারলেও ভাইরাসবাহী বায়ু কণা বা পার্টিকেল ঠেকানোর ক্ষেত্রে এমন মাস্ক কার্যকর নয়।
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক রোবেদ আমিন জানিয়েছেন, ওমিক্রন অনেক বেশি সংক্রমণশীল- এটা প্রমাণিত। এ পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তার উপর ভিত্তি করে বলা যায় অন্যান্য যেসব ভ্যারিয়েন্ট এর আগে এসেছে তার চেয়ে ওমিক্রনের সংক্রমন ক্ষমতা দুই থেকে তিন গুণ বেশি।
গবেষণার বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রনে পুনর্বার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি। সেইসঙ্গে যারা আগে থেকেই অন্যরোগে আক্রান্ত বিশেষ করে ক্যান্সার, কিডনি রোগ- যাদের নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয়, তারা যদি ওমিক্রনে আক্রান্ত হন তাহলে ওমিক্রনের জটিলতা অন্যদের কম হলেও তাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
পিএস/এনআই