নতুন কোচ হান্সি ফ্লিকের কোচিংয়ে যেন নতুন উদ্যমে ছুটে চলেছে বার্সেলোনা। ঝেড়ে ফেলেছে গত মৌসুমের ব্যর্থতা। দারুণ এই যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে ক্লাবটির একাডেমি থেকে উঠে আসা সব খেলোয়াড়। আর এই বিষয়টিই বিশেষ করে নজর কেড়েছে লিওনেল মেসির। ‘লা মাজিয়ার’ তরুণ খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত পারফরম্যান্স এবং সাবেক ক্লাবের ধারাবাহিক সাফল্য দেখে গর্ব বোধ করছেন আর্জেন্টাইন তারকা।
গত মৌসুমে কোনো ট্রফি জিততে না পারা বার্সেলোনার পারফরম্যান্সে ছিল না চেনা ধার। তাতে ছাঁটাই হন ওই সময়ের কোচ শাভি এর্নান্দেস।
ফ্লিকের কোচিংয়ে সেই দল আমূল বদলে গেছে। এবারের লা লিগায় ১৩ ম্যাচ খেলে হেরেছে মাত্র দুটি, বাকি ১১টিই জিতেছে তারা। লিগ টেবিলেও শীর্ষে রয়েছে দলটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হার দিয়ে শুরু করলেও, জিতেছে পরের তিনটিতেই। দুই টুর্নামেন্টেই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল করা দল তারাই।
ক্যারিয়ারে অধিকাংশ এবং সোনালী সময় যেখানে কাটিয়েছেন, সেই ক্লাবের এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই খুব খুশি মেসি। কাতালান ক্লাবটির একাডেমির খেলোয়াড়দের শীর্ষ পর্যায়ে ছড়ি ঘোড়ানো দেখে আরও বেশি আনন্দ পাচ্ছেন তিনি। টিভিথ্রি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গর্বভরে সেই কথাই বললেন আটবারের বর্ষসেরা ফুটবলার।
“বার্সেলোনার মূল দল যেভাবে ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব (একডেমির খেলোয়াড়দের মূল দলে জায়গা করে নেওয়া) করছে, তা দেখে আমি ভীষণ গর্বিত।”
গত মাসের ক্লাসিকোয় রেয়াল মাদ্রিদের মাঠে গিয়ে তাদেরকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে বার্সেলোনা এবং ওই ম্যাচে লামিনে ইয়ামাল-গাভিসহ দলটিতে ছিলেন তাদের একডেমির ৮ খেলোয়াড়।
মেসি নিজেও ছিলেন বার্সেলোনা একডেমির খেলোয়াড়। কাম্প নউয়ে প্রায় দুই দশকের ক্যারিয়ার শেষে ২০২১ সালে তিনি যোগ দেন পিএসজিতে। ফরাসি ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তি শেষে বর্তমানে তিনি খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামিতে।
বার্সেলোনার সাম্প্রতিক সময়ের নজরকাড়া পারফরম্যান্সে অবশ্য একদমই অবাক হননি মেসি।
“বার্সেলোনার দলটি দুর্দান্ত, যদিও আমি একটুও অবাক হইনি। এটা নতুন কিছু নয়, সবসময়ই এমনটাই দেখা যায়, কিংবা বলা যায় ১৩ বছর বয়সে আমি সেখানে যাওয়ার পর থেকে।”
“গত দুই বছর ধরে এই ছোট ছেলেগুলো নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে, এটা দারুণ ব্যাপার। তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে পারলে, এভাবেই তারা সাড়া দেবে, কারণ অন্য যে কারো চেয়ে তারা এই ক্লাবকে (খেলার ধরন) ভালোভাবে জানে। ছোটবেলা থেকেই তারা এভাবে খেলে অভ্যস্ত। তাদেরকে সুযোগ দিলে তারা এভাবেই প্রতিদান দেবে, আমাদের সময়ও এমনটা হয়েছে।”
বার্সেলোনার জার্সিতে এমন কোনো শিরোপা নেই, যা জেতেননি মেসি এবং সবগুলোই জিতেছেন বারবার। সেখানে ২০ বছরের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে, বার্সেলোনা মূল দলের হয়ে ৭৭৮ ম্যাচ খেলে ৬৭২টি গোল করেছেন মেসি, দুটিই রেকর্ড।
শনিবার লা লিগায় সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে খেলবে বার্সেলোনা। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মেসির ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গ উঠলে ফ্লিক বলেন, এটা দলের জন্য অনেক কিছু।
“বার্সেলোনার ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়ের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়াটা সম্মানের। (তার সাবেক ক্লাব) এই দল কেমন খেলছে এবং এখানে তরুণরা কেমন করছে, সে সবকিছু অনুসরণ করে।”