বাইডেন-পুতিন আমলে আবারও শুরু হলো বিশ্বের দুই ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ। গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার ১০ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল বাইডেন প্রশাসন। জবাব দিতে দেরি করেনি মস্কো। তারাও একই সংখ্যক মার্কিন কূটনীতিককে রাশিয়া ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, ওয়াশিংটনের ‘রুশ-বিরোধী পদক্ষেপ’-এর জবাবে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ১০ কূটনীতিক বহিষ্কার এবং আরও আটজন সাবেক ও বর্তমান মার্কিন কর্মকর্তার রাশিয়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে পুতিন প্রশাসন।
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স অ্যাভ্রিল হেইনসের পরিচালক, মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাসের মতো শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও আলোচনার ব্যাপারে এখনও ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে মস্কোর। মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবিত বাইডেন-পুতিন সম্মেলনে কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে তারা।
এক বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এখন যুক্তরাষ্ট্রের সুবুদ্ধি প্রদর্শন এবং সম্মুখ যুদ্ধ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার সময় এসেছে। অন্যথায় মার্কিনিদের জন্য একঝাঁক বেদনাদায়ক সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
পুতিন প্রশাসন কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে আঘাত করতে এবং রাশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক বহর মাত্র ৩০০ জনে নামিয়ে আনতে পারে। কিন্তু এসব ব্যবস্থাগ্রহণ থেকে এখনও কোনোরকমে বিরত রয়েছে মস্কো।
অবশ্য রাশিয়ার এধরনের হুমকিতে খুব একটা বিচলিত নয় যুক্তরাষ্ট্র। মস্কোর শুক্রবারের ঘোষণাকে ‘উস্কানিমূলক ও অনুশোচনীয়’ মন্তব্য করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ।
তারা বলেছে, কোনও ক্রমবর্ধমান চক্রে প্রবেশ করার ইচ্ছা নেই আমাদের, তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেকোনও ধরনের প্রতিশোধের জবাব দেয়ার অধিকার অবশ্যই রয়েছে।
রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের এবারের মনোমালিন্য শুরু মূলত গত মাসে। সেসময় জো বাইডেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে খুনি বলে মনে করেন।
তার এই কথায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয় রাশিয়া। সঙ্গে সঙ্গে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেয় তারা। এরপর প্রায় এক মাস হতে গেলেও তিনি এখনও যুক্তরাষ্ট্রে ফেরেননি। শুধু তা-ই নয়, রাশিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও চলে যেতে বলে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কারণ হিসেবে গত বছরের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ, সাইবার আক্রমণসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া অবশ্য এর সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।