জেরুজালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত আল-আকসা মসজিদে বুধবার ভোরের পর রাতে ফের ইসরায়েলি পুলিশ অতর্কিতে ঢুকে ফিলিস্তিনিদের উদ্দেশ্যে স্টান গ্রেনেড ছোড়ে। প্রত্যুত্তরে, ফিলিস্তিনিরা তাদের দিকে পাথর ও আতশবাজি নিক্ষেপ করে। এ নিয়ে পবিত্র রমজান মাসে ইসলামের তৃতীয় পবিত্র মসজিদে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে এক ফিলিস্তিনি কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আল আকসায় ঘটনায় আরব লীগসহ গোটা বিশ্ব নিন্দা প্রকাশ করেছে।
আল আকসায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি জঙ্গিরা দক্ষিণ ইসরাইলে রকেট হামলা চালায়, যার ফলে ইসরাইল ধারাবাহিক ভাবে বিমান হামলা চালায়।
মুসলিমরা পবিত্র মাস রমজান পালন করছেন। অপরদিকে ইহুদিরা তাদের পাসওভার উৎসব পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সময়েসহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জানান, ইসরাইল পবিত্র ভূমিতে ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক’ করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
হামাস ও ইসলামিক জিহাদ জেরুজালেম, পশ্চিম উপকূল ও ইসরায়েলে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের আল-আকসা মসজিদের চারপাশে জমায়েত হয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ইসলামি জিহাদের নেতা জিয়াদ আল-নাখালা বলেন, ফিলিস্তিনিদের আগামী দিনগুলোর অনিবার্য সংঘাতের মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
গত কয়েক বছরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা ও অভিযান বাড়িয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ফিলিস্তিনি শহর, নগর ও গ্রামে রাত্রিকালীন অভিযান চালিয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলিদের গুলিতে এ বছরেই অন্তত ৮৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনিদের হামলায় একই সময়ে ১৫ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের দাবি, নিহত ফিলিস্তিনিদের অনেকেই জঙ্গি। তবে নিহতদের মাঝে পাথর ছুঁড়েছেন এমন তরুণ-তরুণী ও সহিংসতার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নন এরকম নিরীহ পথচারীও রয়েছে।
আল আকসায় ইসরায়েলের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে এ বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কানাডার বিরোধী দল।
আকসায় হামলার ঘটনায় তুরস্কে বিক্ষোভ হয়েছে। তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
২২ সদস্যের আরব লীগ আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি অভিযানের বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক করছে।
লীগের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হোসাম জাকি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমরা সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলি সরকারের দোষ দেখছি। ইসরায়েল যা করছে তা প্রকাশ করতে আমরা রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে কাজ করতে যাচ্ছি।’
আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংস ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি দলগুলো মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলের হামলার নিন্দা করেছে। এই ঘটনাকে তারা অপরাধ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
ফিলিস্তিনিরা অতি-ডানপন্থী ইসরায়েলি আন্দোলন নিয়ে চিন্তিত যারা আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ইসলামিক কাঠামো ভেঙে ইহুদি মন্দির নির্মাণ করতে চায়।
সূত্র: আল জাজিরা