বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার নলধা গ্রামে বারি-১২ জাতের উচ্চ ফলনশীল বেগুন চাষ করে লাভবান হয়েছেন কৃষক কাজী আল মাসুদ।উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও পরামর্শে হাইব্রিড জাতের এ বেগুন চাষ করে তিনি এখন একজন সফল কৃষক। তার সাফল্যে উদ্বুদ্ধ আরো অনেক কৃষক। লাউয়ের মত সুন্দর আকারে বড় বড় বেগুন দেখতে ও কিনতে ভীড় করছেন অনেকে মাসুদের বারী-১২ জাতের বেগুন ক্ষেতে। বাড়ির পাশে প্রায় ১৫ শতক জমিতে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করে তিনি বাজিমাত করেছেন। উর্বর মাটি এবং সঠিক পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা বেগুনের গাছগুলোতে ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। প্রতিটি গাছেই ৬-৭টি বড় বড় বেগুন ধরে তা মাটি পর্যন্ত ঝুলে রয়েছে।কৃষক কাজী আল মাসুদ বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে এ জাতের বেগুনের বীজ সংগ্রহ করে দেন। বীজ বপনের সপ্তাহ খানেক পর চারা ওঠে। কৃষি অফিস থেকে মালচিং পদ্ধতির সহযোগিতা নিয়ে রোপণ করেন চারা। দু-মাসের মাথায় আসে ফল। নামমাত্র খরচে এখন তিনি বেগুন চাষে লাভবান। আসন্ন রমজান মাসে এখনকার তুলনায় আরো বেশি দামে বেগুন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী তিনি।নলধা-মৌভোগ এলাকার কয়েকজন কৃষক বলেন, সরকারি পর্যাপ্ত দিক নির্দেশনা, প্রণোদনা ও সহযোগিতা পেলে এ জাতের বেগুন চাষ করে স্থানীয় কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব। কৃষক মাসুদ বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করে সফলতা এনেছে। আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। আগামী মৌসুমে আমাদেরও বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করার ইচ্ছে রয়েছে।উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিপ্লব দাস ও রত্না রায় বলেন, ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ফকিরহাটে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ শুরু হয়েছে। আরো কৃষকের মাধ্যমে এ বেগুনের চাষ ছড়িয়ে দিতে তিনি কাজ করে চলেছেন। ফকিরহাটে গেলো বছর সর্বপ্রথম বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ হয়। দামে বেশি ওজনে বেশি ফলনে বেশি এবং রোগ বালাই কম হওয়ায় এতে কৃষকের লাভও বেশি।উপজেলা কৃষি বিভাগথেকে জানা গেছে, গেলো বছর প্রথম বারের মত ফকিরহাটের বিভিন্ন ব্লকে প্রায় ৭০ জন কৃষক বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করেছিল। এ বছর আরো কিছু কৃষক সম্পৃক্ত হয়েছেন।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফকিরহাটের কৃষিতে নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সংযোজনে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় ফকিরহাটে বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ হচ্ছে। এটা লাউ বেগুন নামেও পরিচিত। একটা বারি-১২ জাতের বেগুন ওজনে দেড় কেজি পর্যন্তও হতে পারে। একটি গাছে পনেরো থেকে বিশ কেজি পর্যন্ত ফলন হয়।সারা বছর চাষ করা যায়। রোগবালাই কম, লবন সহিষ্ণু এবং দাম অন্যান্য জাতের বেগুনের চেয়ে সবসময়ই বেশি। তাই এ জাতের বেগুন চাষ করলে কৃষক বেশি লাভবান হবে বলে আমি মনে করি। কৃষক মাসুদকে দেখে অনেক কৃষক তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো এ জাতের বেগুন চাষে আরো কৃষক সম্পৃক্ত করতে।
You Might Also Like
সিনিয়র এডিটর
Leave a comment