অব্যাহত পতনের পর টানা তৃতীয় দিনে দেশের শেয়ারদর ও মূল্য সূচক বেড়েছে। গত মঙ্গলবার থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০০ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে আগের দুই দিনে যতটা চাঙ্গাভাব ছিল, গতকাল তা অনেকটা কমেছে। বেশির ভাগ শেয়ারের দর বাড়লেও সূচক বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। একা ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দরবৃদ্ধি সূচকে ১৬ পয়েন্ট যোগ করেছে।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গল ও বুধবারের শেয়ারদর বৃদ্ধির সুবিধা নিতে গতকাল শেয়ার বিক্রির স্বাভাবিক চাপ ছিল। তবে এর বিপরীতে আশাবাদী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা যেমন বেশি ছিল, তেমনি ফোর্স সেল ইস্যুও তেমন সমস্যা তৈরি করেনি। ফলে শেয়ারদর বাড়তে সুবিধা হয়েছে।
ডিএসইতে গতকাল তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৯৭টির কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২১০টির, কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টির দর। খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বীমা এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বেশির ভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড খাতও ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিপরীতে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের বেশির ভাগ শেয়ারদর কমেছে। অন্য সব খাতে মিশ্রধারা দেখা গেছে।
আগের দুই দিনের মতো চাঙ্গাভাব না থাকার পরও কিছু শেয়ারের দর উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে শেষ পর্যন্ত কেনাবেচা হয়েছে ৩০ কোম্পানি। তবে লেনদেনের মাঝে অন্তত ৫৩ কোম্পানির শেয়ার এমন দরে কেনাবেচা হয়েছিল। অন্তত ৫ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের।
খাতওয়ারি হিসাবে দরবৃদ্ধি পাওয়া বীমা খাতের ৫৮ কোম্পানির মধ্যে ৩৯টির দর বেড়েছে। বিপরীতে ১৯টির দর কমার পরও এ খাতের গড় শেয়ারদর বেড়েছে প্রায় সোয়া ১ শতাংশ। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের ২৩ কোম্পানির মধ্যে ১৬টির দর বেড়েছে। কমেছে ৪টির। এ খাতের গড় শেয়ারদর বেড়েছে পৌনে ২ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ৩৭ মিউচুয়াল ফান্ডের সবগুলোর দর বেড়েছে। এতে এ খাতের গড় দর বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৫ শতাংশ।
শেয়ারদর বৃদ্ধির ধারায় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। গতকাল ডিএসইর লেনদেন ৩৭ কোটি টাকা বেড়ে ৫৫৬ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে একক কোম্পানি হিসেবে সর্বাধিক বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের সর্বাধিক ২৮ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। খাতওয়ারি হিসেবে ওষুধ ও রসায়ন খাতে সর্বাধিক ১১২ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়, যা মোট লেনদেনের সোয়া ২০ শতাংশ।