শরীরকে পুষ্ট ও সুস্থ রাখতে ফলের বড় ভূমিকা রয়েছে। অনেক ফলের মধ্যে কিছু ফল আছে যেগুলো সহজলভ্য, এরকম দুটি ফল হলো পেয়ারা এবং আপেল। এই দুটিই পুষ্টিকর ফল, সহজে পাওয়া যায় এবং সুস্বাদু। উভয়ের মধ্যে তুলনা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে। পছন্দ, স্বাদ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতার ওপর ভিত্তি করে ফল নির্বাচন করতে পারেন।
পেয়ারা এবং আপেলের পুষ্টি
পেয়ারা তার ব্যতিক্রমী ভিটামিন সি উপাদানের জন্য বিখ্যাত। একটি পেয়ারা দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এর ২০০% এরও বেশি সরবরাহ করে। যে কারণে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কাজ করে। অপরদিকে আপেলে সামান্য ভিটামিন সি থাকে। একটি মাঝারি আকারের আপেলে দৈনিক প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি এর মাত্র ১৪% থাকে।
আপেলে রয়েছে প্রচুর ফাইবার। একটি মাঝারি আপেল প্রায় ৪ গ্রাম খাদ্যতালিকাগত ফাইবার থাকে, বিশেষ করে পেকটিন। পেয়ারাতেও ফাইবার থাকে, কিন্তু সামান্য কম, প্রতি ফল প্রায় ৩ গ্রাম। ফাইবার হজম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তা সত্ত্বেও, পেয়ারা দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের ফাইবার সরবরাহ করে, এটি হজমের স্বাস্থ্যের জন্য একটি ভালো পছন্দ হতে পারে।
ক্যালোরি পরীক্ষা
উভয় ফলই ক্যালোরি কম কিন্তু কিছুটা আলাদা। একটি মাঝারি আপেলে প্রায় ৯৫ ক্যালোরি থাকে, অপরদিকে একটি মাঝারি আকৃতির পেয়ারায় প্রায় ৬৮ ক্যালোরি থাকে। উভয়ই ওজন ব্যবস্থাপনার জন্য চমৎকার পছন্দ, কিন্তু পেয়ারা কম ক্যালোরি সরবরাহ করে এবং আরও পুষ্টিগুণে ভরপুর।
পেয়ারায় একটি আপেলের চেয়ে বেশি প্রোটিন (প্রতি ফল ২.৬ গ্রাম) থাকে, আপেলে থাকে এর চেয়ে ১ গ্রামের কম। প্রোটিন পেশী মেরামত, শক্তি বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক শারীরিক ক্রিয়াকলাপে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রোটিনের ঘাটতি পূরণের জন্য আপেলের চেয়ে পেয়ারা কিছুটা হলেও এগিয়ে।
উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ
পেয়ারা হলো লাইকোপিন এবং কোয়ারসেটিন সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী উৎসগুলোর মধ্যে একটি, যা ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করতে, প্রদাহ কমাতে এবং ফলস্বরূপ ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পরিচিত। গোলাপি পেয়ারায় থাকা উচ্চ লাইকোপিন উপাদান প্রোস্টেট এবং স্তনের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
আপেল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি কোয়ারসেটিন এবং ক্যাটেচিনের মতো ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ, যার মধ্যে প্রদাহ বিরোধী এবং হার্ট-প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই নিয়মিত আপেল খাওয়ারও রয়েছে অনেক উপকারিতা।