সৈয়দা আনিসা মুর্শেদ। ২০ বছর ধরে আছেন পুঁতি শিল্পের সঙ্গে। মাত্র ১০ বছর বয়সে শখের বশেই পুঁতির কাজ শেখেন। দীর্ঘ অনুশীলনের মাধ্যমে এ শিল্প আয়ত্ত করেন। তবে কখনো ভাবেননি তার এই শখই একসময় এনে দেবে বিশ্বরেকর্ডের তকমা।
আনিসা এক ঘণ্টায় ৪২.৩ মিটার লম্বা পুঁতির মালা তৈরি করে গিনেস বুক অব রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন। এই মালা তৈরি করতে তার লেগেছে মোট ১ হাজার ৬৭১টি পুঁতি। এর আগে এই রেকর্ড ছিল ৩২.৭ মিটার একটি পুঁতির মালার। যা থেকে আনিসা প্রায় ১০ মিটার লম্বা পুঁতির মালা তৈরি করে রেকর্ড গড়েছেন।
আনিসা পুঁতি শিল্পে তার দক্ষতার পরিচয় দিতেই এ বছর ‘লংগেস্ট থ্রেড অব বিডস মেড বাই এন ইন্ডিভিজুয়াল ইন ওয়ান আওয়ার’ শিরোনামে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেন। দিনটি ছিল তার জন্মদিন ১২ই আগস্ট ২০২২। রেকর্ড এটেম্পট এর প্রায় আড়াই মাস পর ১ নভেম্বর ২০২২ এ আসে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস থেকে চূড়ান্ত ঘোষণা।
বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করতে বেশ ধৈর্য ও পরিশ্রমের পরিচয় দিতে হয়। কারণ এর জন্য রেকর্ডধারীকে পাড়ি দিতে হয় দীর্ঘ প্রস্তুতি এবং প্রমাণের অসংখ্য ধাপ। অনেক সময় বছরের পর বছর কেটে যায় এই সাধনায়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এ একক খেতাবধারী বর্তমানে তিনিই একমাত্র বাংলাদেশি নারী। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের একক খেতাব পেয়েছেন ১৫ জনেরও কম ব্যক্তি। তার মধ্যে আনিসা একজন।
মার্কেটিং ও কনটেন্ট বিশেষজ্ঞ আনিসা তার শখের পেশা হিসেবে ‘হেই অ্যানিসে’ প্রোজেক্ট শুরু করেছিলেন ২০২১ সালে। ভিডিওর মাধ্যমে সৃজনশীলভাবে তিনি তুলে ধরার চেষ্টা করেন অনন্য পুঁতি শিল্পকে। সেখানেও বেশ সফল আনিসা।
আনিসার ইচ্ছা, বাংলাদেশি কারিগরদের পুঁতি শিল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরা এবং এটিকে একটি উপার্জনের অন্যতম সেক্টর হিসেবে গড়ে তোলা। আনিসা বলেন, পুতি শিল্পের পিছনের সৃজনশীলতা, প্রচেষ্টা এবং সময়কে প্রায়ই উপেক্ষা করা হয় কারণ এটি এখনো খুব জনপ্রিয় শিল্প নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশে, যেখানে হস্তশিল্পের পণ্য যথাযথভাবে প্রশংসিত হয় না। পুঁতির কাজ শুধু একটি কারুকাজ নয়; এটি একটি চর্চা যা সৃজনশীলতা, একাগ্রতা এবং ধৈর্য বিকাশে সহায়তা করে।