পাকিস্তান ক্রিকেট মানেই যেন পরিবর্তনের খেলা। ২০১৯ সাল থেকেই পাকিস্তানের কোচিংস্টাফ থেকে দলের অধিনায়ক পদগুলোতে কোনো দৃঢ়তা নেই। এ সময়ে কোনটার স্থায়ীত্ব ছয়মাসের ওপরে যেনো উঠেই নেই। বোর্ডের শীর্ষ পদ বদল হলেই পরিবর্তনের হাওয়া লাগে ক্রিকেটার থেকে কোচ, নির্বাচকদেরও। যার জন্য আইসিসি ইভেন্টে ভরাডুবি হচ্ছে পাকিস্তানের। বৈশ্বিক আসরে ম্যান ইন গ্রিনদের ভরাডুবি হলে দলের কোচিং থেকে নির্বাচকদের প্যানেল পরিবর্তন করা হয় যা বড় টুর্নামেন্টে খারাপ করার কারণ হিসেবে দেখছেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ আকিব জাভেদ।
সাবেক পাকিস্তানি এই তারকা বলেন, ক্রিকেটারদের এই অবস্থার জন্য দায়ী বেশি পরিবর্তন। তিনি বলেন, ‘আড়াই বছরে আমরা ১৬ জন কোচ ও ২৬ জন নির্বাচক পরিবর্তন করেছি। যদি বিশ্বের যেকোনো দলের সঙ্গে এমনটা হয়, তাহলে তাদের পারফরম্যান্সও একইরকম হবে।’
আকিবের এমন মন্তব্যে তাকে পাগল বলে আখ্যা দিয়েছন পাকিস্তানের সাবেক কোচ জেসন গিলেস্পি। সাবেক অস্ট্রেলিয়ান কোচের মন্তব্য করার কারণ অবশ্য তাকে সরিয়ে আকিব কোচিংয়ের চেয়ারে বসার জন্য। গিলেস্পি অভিযোগ করে বলেন, তাকে ও কার্স্টেনকে সরিয়ে কোচের চেয়ারে বসতে আড়ালে থেকে আকিব অনেক কিছু করেছেন। একই সঙ্গে আকিবকে ‘পাগল’ হিসেবে আখ্যা দেন তিনি।
গিলেস্পির অভিযোগে একমত পাকিস্তানের সাবেক কোচ ও টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থারও। তার মতে, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করছে। টকস্পোর্টের সাথে কথা বলতে গিয়ে আর্থার বলেন, ‘সত্যি বলতে, এই উক্তিটি আমার খুব ভালো লেগেছে। জেসন গিলেস্পি একজন দুর্দান্ত কোচ, চমৎকার মানুষ। পাকিস্তান ক্রিকেট শুধু নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছে। এটি তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু।’
তিনি আরও বলেন, ‘সত্যিই তারা কিছু ভালো কোচ পেয়েছিল যারা তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু তারপর সেই মেশিন, যা পাকিস্তানে কাজ করে, তা অবিরত তাদের পিছু টেনে ধরে এবং মিডিয়াতে এজেন্ডা চাপানো হয়।’
পাকিস্তান ক্রিকেটে বর্তমান অস্থিরতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আর্থার বলেন, ‘অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে, তাদের এখন সম্পদও রয়েছে। দলে তরুণ প্রতিভা অনেক; তাদের অসাধারণ দক্ষতা আছে। তবু এখনও এতটা বিশৃঙ্খল। এটা সত্যিই হতাশাজনক।’
আর্থার আরও বলেন, ‘এটি একটি জঙ্গলের মতো এবং আমি গ্যারি ও জেসনের জন্য সত্যিই দুঃখিত। আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই যে তাদের দুর্বল করা হয়েছে… এটা খেলোয়াড়দের জন্য ক্ষতিকর এবং অবশেষে পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্যও ক্ষতিকর।