পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর ‘দমন-পীড়ন’সহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব রেখে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ বা কংগ্রেসে বিল উত্থাপন করা হয়েছে।
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতির জন্য পদক্ষেপ না নিলে ১৮০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আহ্বান রয়েছে প্রস্তাবিত এ বিলে।
ডেমোক্র্যাট ও ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান-সর্বদলীয় আইনপ্রণেতাদের উদ্যোগে এটি উত্থাপিত হয়েছে। ডন।
সাউথ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান জো উইলসন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান জিমি প্যানেট্টা ‘পাকিস্তান ডেমোক্রেসি অ্যাক্ট’ নামের বিলটি গত সোমবার কংগ্রেসে উত্থাপন করেন।
উত্থাপনের পর আরও পর্যালোচনার জন্য বিলটি পাঠানো হয়েছে কংগ্রেসের পররাষ্ট্রবিষয়ক এবং বিচারসংশ্লিষ্ট কমিটিদ্বয়ের কাছে। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাগনিটস্কি মানবাধিকার জবাবদিহি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এর আওতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যাবে। পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের সঙ্গে জড়িত প্রধান কুশীলবদের চিহ্নিত করতে এবং তাদেরও নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে বিলে।
তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যদি রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করে এবং ‘অন্যায়ভাবে সাজাপ্রাপ্ত সব রাজনৈতিক বন্দিকে’ মুক্তি দেয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এসব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে পারবেন।
২০২২ সালে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এক অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হলে ক্ষমতাচ্যুত হয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয় দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ এনে।
২০২৩ সালের আগস্টে তিনি গ্রেফতার হন। বর্তমানে তাকে রাওয়ালপিন্ডির একটি হাইসিকিউরিটি আদিয়ালা কারাগারে রাখা হয়েছে।
অনেক পর্যবেক্ষকের মতেই পাকিস্তানের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলগুলোর চেয়েও বহুগুণ ইমরান খানের জনপ্রিয়তা। বিশেষত দেশটির তরুণ সমাজের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি।
এর আগে ২০২৪ সালের জুনেও একই ধরনের একটি প্রস্তাবনা পাশ হয় কংগ্রেসে। এর পক্ষে ৯৮ শতাংশ কংগ্রেস সদস্য ভোটও দেন।
পাশ হওয়া বিলটিতে পাকিস্তানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন তখন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।