সুপ্রিম কোর্ট বুধবার পাঞ্জাব সরকারের করা ইমরান খানের শারীরিক রিমান্ডের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানান, গ্রেপ্তারের এক বছরেরও বেশি সময় পর এ ধরনের আবেদন করার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। এই মামলাটি শুনানির জন্য গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি হাশিম কাকার ও বিচারপতি সালাহউদ্দিন পানহোয়ার।
রায়ে বলা হয়, পাঞ্জাব সরকার চাইলে ট্রায়াল কোর্টে নতুন করে আবেদন করতে পারে। তবে আদালত স্পষ্ট করে দেন, ইমরান খানের আইনজীবীরা চাইলে এই ধরনের যে কোনো আবেদন চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন। রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি হাশিম কাকার বলেন, আসামিকে গ্রেপ্তারের দেড় বছর হয়ে গেছে, এই পর্যায়ে শারীরিক রিমান্ডের প্রশ্নই ওঠে না।
মামলাটি মূলত পাঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে ইমরানের শারীরিক হেফাজত চাওয়ার প্রসঙ্গে। যাতে তাঁর ফটো, পলিগ্রাফ (মিথ্যা ধরার যন্ত্র) ও ভয়েস ম্যাচিংসহ বিভিন্ন ফরেনসিক টেস্ট করা যায়। শুনানির সময় পাঞ্জাবের প্রসিকিউটর জেনারেল যুক্তি দেন, এসব পরীক্ষা তদন্তের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে বিচারপতি কাকার বলেন, আলোচ্য আবেদন শুধু শারীরিক রিমান্ড সম্পর্কিত, ফরেনসিক পরীক্ষার নয়।
বিচারপতি সালাহউদ্দিন পানহোয়ার প্রশ্ন তোলেন, এমন পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা কোথায়? তিনি মন্তব্য করেন, খুনের মতো গুরুতর মামলায় কখনও এ ধরনের পরীক্ষা করা হয়নি। আদালত আশাবাদী, সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্র একই রকম আগ্রহ দেখাবে।
সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্যকে সরকারের উচ্চ প্রোফাইল রাজনৈতিক মামলাগুলোর প্রতি অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ার এক প্রকার পরোক্ষ ভর্ৎসনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে সাধারণ নাগরিকরা বিচারপ্রাপ্তিতে নানা রকম দেরি ও অনিয়মের মুখোমুখি হন।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায় তাৎক্ষণিকভাবে ইমরানকে শারীরিক হেফাজতে নেওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে, যতক্ষণ না নতুন কোনো ভিত্তিতে ট্রায়াল কোর্টে আবেদন করা হয়।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল মামলাগুলোর ক্ষেত্রে আদালতের বাড়তে থাকা নজরদারি এবং কার্যপ্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে।