খুলনায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ও সিয়ামের অায়োজনে ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নগরায়নে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে খুুলনায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।সিয়ামের নির্বাহী পরিচালক এড. মাসুম বিল্লাহ এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা প্রেসক্লাবের অাহ্বায়ক এনামুল হক।অনুষ্ঠানে খুলনায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ও সিয়াম উদে্যাগে নগরের উন্নয়নে বেশ কিছু কাঠামো পেশ করে।
নগরে ন্যায়সঙ্গত অন্তর্ভুক্তিমূলক উত্তরণ- এর উদ্দেশ্য তুলে ধরে অায়োজকরা বলেন, নগরের সামাজিক কাঠামোতে পরিবর্তন। নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় সকল শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহন ও মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া। সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া । সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী চিহ্নিত করা ও তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা। জলবায়ু বিপর্যয় রোধে কাজ করা নগর জীবনে সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। নগরের উন্নয়নে সকল শ্রেণীর মানুষকে মতামত দেয়ার সুযোগ করে দেয়ার লক্ষেই এ উদে্যাগ।সভাপতি সিয়ামের নির্বাহী পরিচালক এড. মাসুম বিল্লাহ বলেন, খুলনা শহরকে একটি অাধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। সংবাদকর্মীদের সাথে উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দপ্তরের কর্মকর্তাদের এক টেবিলে বসিয়ে মতবিনিময় করা প্রয়োজন। এতে প্রতিটি দপ্তরের সমন্বয় সাধন সম্ভব হবে।খুলনা শহরকে ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শহর হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুলনা শহর পূর্ব থেকেই দেশের শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, খুলনা শহরে বিভিন্ন শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এখানে ভিন্ন চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। অন্যদিকে খুলনা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ এলাকা। বন্যা, পানির লবণাক্ততা, সুপেয় পানির সংকট, কৃষিভূমির পরিমাণ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে শহরটি পর্যুদস্ত।
ফলশ্রুতিতে শহরের জনগণ ক্রমাগত কর্মসংস্থানের সুযোগথেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পরে সমগ্র দেশের সাথে স্বল্প সময়ে সরাসরি যাতায়াত ব্যবস্থা চালু হওয়ায় খুলনায় শিল্প বিপ্লবের একটি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা একই সাথে নতুন কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি করবে। চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা- এরকম একটি মিশ্র পরিস্থিতিতে ন্যায়সঙ্গত পরিবর্তনও সামাজিক সমতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের চাহিদার প্রতিফলন থাকা অত্যন্ত জরুরি। আজকের আয়োজন থেকে খুলনা শহরকে ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শহর হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে করণীয় নিরূপণে প্রয়াস নেয়া হয়েছে। সরকারের সকল সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম জনকল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে গৃহীত হয়। জনগণের অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ ব্যতীত এ সকল সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম ন্যায়সঙ্গত হওয়াসম্ভব নয়, কারণ একমাত্র জনগণই জানেন তাদের জন্য কোনটি প্রয়োজন। জন অংশগ্রহণ ছাড়া প্রকল্প গৃহীত ও বাস্তবায়িত হওয়ার ফলে অনেক ক্ষেত্রেই সামাজিক অসমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জনগণ সর্বময় ক্ষমতার উৎস। কাজেই জনগণের অংশগ্রহণ ব্যতীত কোনকার্যক্রম ফলপ্রসূ হতে পারে না।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব ও দৈনিক আমার দেশ এর ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ও দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার আবুল হাসান হিমালয়, কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান আব্দুর রাজ্জাক রানা, দৈনিক নয়াদিগন্তের ব্যুরো প্রধান এরশাদ আলী, দৈনিক প্রবাহের চীফ রিপোর্টার মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, দৈনিক যুগান্তরের আহমদ মুসা রঞ্জু, দেশ টিভির নূর ইসলাম রকি, কালবেলার বশির হোসেন, ঢাকা পোস্টের মোহাম্মদ মিলন, দৈনিক বাংলার আউয়াল শেখ, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন খুলনা জেলা শাখার সভাপতি এম এ হাসান ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল গাজী উজ্জল, দৈনিক প্রথম আলোর শেখ আল এহসান, ফটো সাংবাদিক সাদ্দাম হোসেন, ডেইলী স্টারের দীপঙ্কর রায়, দৈনিক জন্মভূমির বাপ্পী খান, খুলনা গেজেটের ইমরান হোসেন, দৈনিক প্রবাহের মামুন রেজা হাওলাদার, প্রতিদিন সেবকের মানজারুল ইসলাম, সাংবাদিক এম এ আজিম, নগরের খবরের তানজিলা খাতুন, হাবিবুর রহমান, সিয়ামের প্রকল্প কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, মো. ইমরান মিয়া প্রমুখ।