রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে চলমান সংলাপে বুধবার ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ‘সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি’র মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনসহ পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছে।
চলমান আলোচনার ১৫তম দিনে বুধবার এনপিপির চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ ছালাউদ্দিন সালু এবং মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই মন্ডলের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনের দরবার হলে আলাদাভাবে সংলাপে অংশ নেয়।
বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, এনপিপি সৎ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ‘সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি’ গঠনের সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, সৎ ও নির্দলীয় ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করার ওপর জোর দেন। প্রতিনিধিদল সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করেন।
রাষ্ট্রপতি এনপিপি প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ও মতবিনিময় একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে যেকোনো সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও মতবিনিময় ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রদানের জন্য ধন্যবাদ জানান।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিকসচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেসসচিব মো. জয়নাল আবেদীন ও সচিব (সংযুক্তি) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
আবেদীন বলেন, রাষ্ট্রপতি একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য ইসি গঠনের বিষয়ে সংলাপের জন্য ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ ৩২টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চলমান সংলাপের প্রথম দিন ২০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের (সংসদ) প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন তিনি।
এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজকের সংলাপে অংশ নেয়নি। এ নিয়ে মোট সাতটি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকে। আগামীকাল ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় জাকের পার্টি, সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং রাত ৮টায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) সঙ্গে সংলাপে বসবেন রাষ্ট্রপতি।
এদিকে আগামী ১৭ জানুয়ারি (সোমবার) বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংলাপের কথা রয়েছে। এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং চারজনের বেশি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক মেয়াদে সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি একটি নতুন ইসি গঠন করবেন, যার অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
পিএসএন/এমঅাই